রাজশাহীর মোহনপুরে শফিউল (২৫) নামক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ওই শিক্ষার্থী উপজেলার রায়ঘাটি ইউনিয়নের টাঙ্গন কামারপাড়া (বড়াইল) গ্রামের সাইদুর রহমানের বড় ছেলে। ভিকটিমের প্রতিবেশী এক শিক্ষক জানান, সফিউল ভদ্র, মিশুক প্রকৃতির ছেলে ছিলেন। অসুস্থ্য মায়ের অবর্তমানে বাড়ির রান্না-বান্নার কাজ করতেন। প্রতিবেশীদেরও সহযোগিতা করতেন। হত্যা কান্ডের আগে, দিনের বেলায় নিজ বাড়িতে রাজমিস্ত্রীকে সহযোগিতা করেছেন। হত্যার শিকার শফিউল রাজশাহী কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।
ভিকটিমের পিতা-মাতা সূত্রে জানা গেছে শনিবার রাত সাড়ে আট ঘটিকার দিকে কামারপাড়া বাজারস্থ শাহিনের কম্পিউটারে কাজ সারবেন বলে বাড়ি থেকে বের হন। রাত দশ ঘটিকার দিকে শাফিউলের মুঠোফোনে বারবার কল দিয়ে বাবা সাইদুর ফোন বন্ধ পান। সকালে বাড়ির অদূরে আমবাগানে ছেলের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। সরজমিন কামারপাড়ায় গিয়ে ভিকটিমের পিতা-মাতা, আত্মীয় স্বজনদের বিলাপ করতে দেখা গেছে। স্থানীয়রা মোহনপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে।
বেলা বারোটার দিকে সিআইডির ( অপরাধ তদন্ত বিভাগ) একটি ফরেনসিক টিম এসে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করছিলেন । প্রতিবেশী এবং ভিকটিমের ঘনিষ্ট আত্মীয় (কলেজ শিক্ষার্থী) মামাত ভাই সেলিম রেজা কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছেন। ওই আত্মীয় জানিয়েছেন, সব বিষয়ে সফিউল তাঁর সাথে শেয়ার করতেন। প্রতিবেশী বারিকের স্ত্রীর সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিলো শফিউলের। ঘটনার দিন রাতে কাঠমিস্ত্রী বারিকের বউ বৃষ্টি বিবি শফিউলকে ডেকে নেন।
তাঁর পর থেকে শফিউল নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর দাবী, কাঠমিস্ত্রী বারিক (৪৬) , স্ত্রী বৃষ্টি (৩৬) মিলে শফিউলকে বাড়ির ভিতর হত্যা করে আমবাগানে ফেলে রেখে যায়। লাশের গলায় দড়ি পেঁচানো ছিল। লাশের বিশ গজ দূরে দক্ষিণ দিকে নিহতের মাফলার, একটি স্যান্ডেল পড়ে ছিল যা মৃতের বাবা শনাক্ত করেন। উত্তর দিকে একজোড়া কালো-লাল ফিতার স্যান্ডেল পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে স্যান্ডেল জোড়াটি খুনিরা ফেলে গেছে।
মোহনপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তৌহিদুর রহমানের নিকট সরাসরি জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রাথমিক জিঙ্গাসাবদের জন্য কাঠ মিস্ত্রী বারিক এবং তাঁর স্ত্রী বৃষ্টিকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বিকেল চার ঘটিকার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লাশ মর্গে নেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। শত শত মানুষ মরদেহ দেখার জন্য ভিড় জমান। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় আতংক বিরাজ করছে।