এবার গুগলের দেয়া তথ্যর ভিত্তিতে বাংলাদেশি শিশু যৌন নিপীড়ককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শিশু যৌন নির্যাতনের একটি ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখার সূত্র থেকে ওই নিপীড়ককে শনাক্ত করে গুগল। এরপর গুগলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বরিশাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।
এ বিষয়ে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল মাসুদ বলেন, ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেনের (এনসিএমইসি) সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকে তারা আমাদের অনেক তথ্য দিচ্ছে। আমরা সেগুলো যাচাই বাছাই করে দেখি। তার কিছু থাকে ইন্টেলিজেন্স, কিছু সতর্কতামূলক, কিছু সরাসরি শিশুদের নির্যাতনের। আমরা সেগুলো যাচাই বাছাই করে বিভিন্ন ঘটনায় পদক্ষেপ নিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, মোবাইলে শিশু নিপীড়নের তথ্যটি ইন্টারনেটে সংযুক্ত মোবাইল ডিভাইসে রাখার পরেই শনাক্ত করে ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগল। এরপর গুগল সেটি জানায় ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেনকে (এনসিএমইসি)। পরে তারা এই তথ্যটি বাংলাদেশের সিআইডির কাছে পৌঁছে দেয়। এরপর সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন বিভাগ ওই নিপীড়ককে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে।
জানা গেছে, ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেন (এনসিএমইসি) যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান – যারা শিশু যৌন নির্যাতন ও শিশু পর্নোগ্রাফি বন্ধে কাজ করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত গুগল, ফেসবুকের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নেটওয়ার্কে শিশুদের যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য এই প্রতিষ্ঠানটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে থাকে। তারা সেসব তথ্য বিভিন্ন দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সরবরাহের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে এই এনসিএমইসির সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশের অপরাধ তথ্য বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল মাসুদ জানান, সংস্থাটির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এর মধ্যেই বেশ কয়েকটি অভিযান চালানো হয়েছে। প্রায় দেড় বছর আগে বরিশালে শিশু নিপীড়নের ওই ঘটনাটি ঘটে। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে গত ১২ই জানুয়ারি ওই নিপীড়ক তরুণকে রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে বরিশালে শ্রমিক হিসাবে কাজ করতো। বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সে শিশুটিকে নিপীড়ন করেছিলো। শিশু নিপীড়নের কথা স্বীকার করে ইতোমধ্যে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে সেই তরুণ। কিন্তু ঘটনার শিকার শিশুর পরিবার মামলা করতে রাজি হয়নি। ফলে সিআইডির এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।
বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল মাসুদ বলছেন, আমার তদন্ত করতে গিয়ে দেখেছি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়ে শিশু বা ছেলে শিশু নিপীড়নের ঘটনাগুলো ঘটছে নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমে। ফলে আমরা গ্রেপ্তার করার পরেও অনেক সময় পরিবারগুলো মামলা করতে অনিহা প্রকাশ করে। গুগল বা ফেসবুকের মাধ্যমে পাওয়া আরও বেশ কিছু তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। সেগুলো নিয়েও আরও কিছু অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।