২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালে এই দিনে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) মাতৃভাষা বাংলা করার দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়ে বাঙলার শিক্ষার্থীরা। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজপথে শ্লোগানে মুখরিত ছিলো ”রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই”। সেই প্রেক্ষিতে আজ পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ নামে একটি আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এই রাষ্ট্রভাষা বাংলাকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করেছেন যারা, তাদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য শহিদ মিনার। শহিদদের স্মরণে প্রতিবছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। তবে বর্তমান কালে শুধু ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাদে অন্যদিনগুলোতে অযন্তে অবহেলায় পড়ে থাকে রাজশাহীর শহিদ মিনারগুলো।
আর মাত্র দুইদিন বাকি শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর। কিন্তু রাজশাহীর বিভিন্ন শহিদ মিনারে এখনো শুরু হয়নি পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। ধুলা বালিতে ভরে আছে চারপাশ। পায়ে জুতো পড়ে শহিদ বেদিতে উঠে পড়ে জনসাধারণ। রাজশাহীর কোর্ট শহিদ মিনার, ভুবন মোহন পার্ক শহিদ মিনার এবং তালাইমারি শহিদ মিনার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
রাজশাহীর তালাইমারি শহিদ মিনার ঘুরে দেখা যায় ২১ শে ফেব্রুয়ারি কাছে আসলেও নেই কোন পরিষ্কার করার অভিযান। গাছের পাতায় আবদ্ধ চারপাশ। প্রতিদিন হয় না পরিষ্কার। মানুষের মধ্যে নেই স্থানটির জন্য বিশেষ শ্রদ্ধা। যে যার মতো শহিদ মিনারে বসে আছে। বন্ধুদের আড্ডার স্থানে পরিনত হয়েছে মিনারটি। তবে স্থানীয়দের কাছে জানা যায় রাজশাহী পদ্মা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এবং ওয়াই এম স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে বছরে মাঝে মধ্যে শহিদ মিনারের পরিচর্যা করা হয়। কিন্তু সামনে নদীর চর হওয়ায় অনেক স্থানীয়রা এখানে এসে বসেন। ২০ শে ফেব্রুয়ারি ক্লাবের পক্ষ থেকে পরিস্কার করা এবং সাজ সজ্জার কাজ শুরু হবে।
শহিদদের স্মরনে শহিদ মিনার তৈরি হলেও কেন নেই তার পরিচর্যা? কিছু মিনার পরিষ্কার থাকলেও কিছু মিনারের খোঁজ খবর নেই না কেউ। রাজশাহী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিমির্ত রাজশাহী কোর্ট চত্বর শহিদ মিনার। জনসাধারণের প্রবেশ তেমন নাও থাকলে গাছ পালায় ঘেরা হওয়ায় মিনারের চারপাশসহ মিনারটি পাতায় আবদ্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসনের আওতায় থাকায় মাঝে মধ্যে পরিষ্কার অভিযান করা হয়।
অন্যদিকে রাজশাহীর ভুবন মোহন পার্কের শহিদ মিনারের অবস্থা ক্রমেই আলাদা। বাজার এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় আশেপাশে আড্ডার স্থান হিসেবে গড়ে উঠেছে মিনারটি। এছাড়াও বছরজুড়ে মিনারের পাদদেশে পাখির মল পড়ে থাকে। পার্কের ভেতরে সাইকেল মটরসার্কেল রাখার স্থান করে নিয়েছে স্থানীয়রা। শহিদ মিনারে চত্বরের ভেতরে বাদামের খোসাসহ নানান আবজর্না পড়ে থাকে। সাধারন মানুষদের জুতো পড়েও উঠতে দেখা যায় শহিদ মিনারে। পাশে চায়ের দোকান হওয়ায় আড্ডা দেওয়া আরও যেন সহজ হয়ে উঠেছে। ভাষার মাসে শহিদ দিবসকে ঘিরেই শুধু চলে পরিস্কার করার কাজ অন্যদিন যেন তা অবহেলিত ভাবে পড়ে থাকে। সারা বছরই দর্শনার্থী ও জনসাধারনের দ্বারা ক্ষুণœ হচ্ছে শহিদ মিনারের মর্যাদা। যে যেভাবে পাড়েন উপড়ে উঠে ঘুরতে থাকে, ছবি তোলে।
অনেকে পরিবার নিয়ে অবসর সময় কাটান মিনারে । এভাবেই ভাষার মাস এবং ২১ মে ফেব্রুয়ারি বাদে অন্য দিনগুলোতে অবহেলায় পড়ে থাকে শহিদ মিনারগুলো । এছাড়া অনেক স্কুল এবং কলেজেও শহিদ মিনার থাকলেও কতৃপক্ষ ফেব্রুয়ারি মাস ব্যাতিত করে না পরিষ্কার। তাহলে কী শহিদদের সম্মান শুধু এক দিন কিংবা এক মাসেই সীমিত