ভারতের চার রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, কেরালা, তামিলনাড়ু ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পদুচেরিতে মঙ্গলবার ফের শুরু হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে এই দিন তৃতীয় দফায় ভোট গ্রহণ চলছে। কেরালা, তামিলনাড়ু ও পদুচেরিতে মঙ্গলবার প্রথম ও শেষ দফায় হচ্ছে ভোট গ্রহণ।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের নির্বাচন কমিশন দেশের চার রাজ্য ও এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা নির্বাচনের তফসিলে ঘোষণা করেছিল, ২৭ মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গে আট দফায়, আসামে তিন দফায় এবং কেরালা, তামিলনাড়ু ও পদুচেরিতে এক দফায় ভোট গ্রহণ হবে। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় দফা ও আসামে শেষ দফার ভোটগ্রহণ চলছে।
ভারতের সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ৭ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত চার রাজ্য ও পদুচেরির ২০ কোটিরও বেশি ভোটার ভোট দেবেন।
পশ্চিমবঙ্গে ৩১ টি আসনে ভোট গ্রহণ হচ্ছে এই দিন। এই আসনগুলোর সবগুলোতেই প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। ভাগে-যোগে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস-সিপিএম জোটও। ৩১টি আসনের মধ্যে সাতটিতে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস এবং ১৩টিতে সিপিএম। এছাড়া অন্যান্য আসনগুলো জোটভূক্ত অপর তিন শরিক আইএসএফ, এআইএফবি এবং আরএসপির মধ্যে ভাগাভাগি হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের এই ৩১ টি আসানের মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে হুগলি জেলার তারকেশ্বর। এই আসানে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়েছেন করছেন রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ এবং বিজেপির অন্যতম ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’ স্বপন দাশগুপ্ত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘কাছের লোক’ বলেও পরিচিত তিনি। এ আসনে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের রমেন্দু সিংহ রায়।
এছাড়া আরো যেসব ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী মঙ্গলবার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন— ধনেখালি আসনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কারিগরি শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী অসীমা পাত্র, রায়দিঘী আসনে সিপিএম নেতা কান্তি গাঙ্গুলী এবং শ্যামপুর আসনে বিজেপির টিকেটে নির্বাচনে দাঁড়ানো মডেল ও অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী।
বরাবরই তামিলনাড়ু রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় এআইএডিএমকে ও ডিএমকে- এই দুটি দলের মধ্যে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তামিলনাড়ু বিধানসভার ২৩৪ টি আসনের মধ্যে ১৯১ টিতে প্রার্থী দিয়েছে এআইএডিএমকে। বাকি ৪৪ টি আসনের ২৩ টিতে প্রার্থী দিয়েছে এআইএডিএমকের জোট সঙ্গী পিএমকে এবং ২০ টিতেতে প্রার্থী দিয়েছে অপর জোটসঙ্গী বিজেপি। একটি আসনে কোনো প্রার্থী দেয়নি এআইএডিএমকে জোট।
এআইডিএমকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল ডিএমকে প্রার্থী দিয়েছে ১৮৮ আসনে; বাকি আসনগুলো ছেড়ে দিয়েছে দলের জোটসঙ্গী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের। ডিএমকের প্রধান জোটসঙ্গী কংগ্রেস ২৫ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
তবে এবার তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চমক হিসেবে হাজির হয়েছে দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত অভিনেতা কমল হাসানের রাজনৈতিক দল এমএনএম। গতবছর এই দল গঠন করেন কমল হাসান। এবারের নির্বাচনে ১৪২ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে এমএনএম।
কেরালায় বিধানসভায় নিজেদের প্রাধান্য ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর রাজ্যে সরকারে ক্ষমতাসীন দল সিপিএম। ১৪০ আসনের বিধানসভা নির্বাচনে সবগুলো আসনেই প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম নেতৃত্বাধীন জোট এলডিএফ। সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে ৭৭ টি আসনে। বাকি আসনগুলো জোটসঙ্গী রাজনৈতিক দল সিপিআই, জেডিএস এবং এনসিপির জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন আসনে দাঁড়ানো ১১ স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে সিপিএম।
কেরালায় এলডিএফ জোটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইউডিএফ এবার প্রার্থী দিয়েছে ১২৮ টি আসনে। কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ৯৩ টি আসনে, বাকিগুলো জোটসঙ্গী আইইউএমএল এবং কেরালা কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছে। বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ১১৩ টি আসনে।
তৃতীয় ও শেষ দফার নির্বাচনে আসামে ৪০ টি আসনে ভোট হচ্ছে। এই ৪০ টি আসনের মধ্যে বিজেপি-এজিপি জোট সবগুলোতেই প্রার্থী দিয়েছে। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল কংগ্রেস দিয়েছে ২৪ টি আসনে প্রার্থী।