ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটের ২২টি খাত নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এর মধ্যে ১০টি খাতে ৬৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি নিরূপণ করেছে ইউজিসির বাজেট পরীক্ষক দল। ইউজিসির এ-সংক্রান্ত এক পরিপত্রে বিষয়টি উঠে এসেছে।
ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রেজাউল করিম হাওলাদার স্বাক্ষরিত ওই পরিপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কর্মকর্তাদের অবসর গ্রহণের নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া সেশন বেনিফিট বাবদ ২ কোটি ১০ লাখ; ২০১৪-১৫ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অসমন্বিত অগ্রিম বাবদ ১৫ কোটি ১৩ লাখ; বিধিবহির্ভূতভাবে উপরেজিস্ট্রার/সহকারী রেজিস্ট্রার সমমানের কর্মকর্তাদের উচ্চতর বেতন স্কেল প্রদান ও পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তাদের তৃতীয় গ্রেড প্রদান করায় ১ কোটি ১০ লাখ; বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনে বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পূর্ণ বাড়িভাড়া ভাতা প্রদানে ১ কোটি ৫০ লাখ; বিধিবহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে মাসিক ৫ হাজার টাকা করে গবেষণা ভাতা দিয়ে ৯ কোটি ৬০ লাখ; বহিঃক্যাম্পাস ভাতা প্রদানে ১ কোটি ৫ লাখ; বিধিবহির্ভূতভাবে শিক্ষকদের বই-খাতা বাবদ ৭৬ লাখ প্রদান; অর্থবছর শেষে কমিটেড এক্সপেন্ডিচার হিসেবে অর্থ অন্য তহবিলে স্থানান্তর করায় ২৮ কোটি ২৮ লাখ; ড্রাইভারদের টেকনিক্যাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ এবং ১ হাজার টাকা করে ভাতা প্রদানে ৩ লাখ টাকাসহ মোট ৬৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি নিয়মকানুন রয়েছে, সেগুলো মানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি অনুরোধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক স্বায়ত্তশাসন নেই, একাডেমিক স্বায়ত্তশাসন আছে। সে হিসেবে
আর্থিক বিষয়ে সরকারি নিয়মকানুন মানতে হবে।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কর্মকর্তাদের অবসর গ্রহণের বয়স কোনো এক সময় ৬২ বছর করা হয়েছে। শিক্ষকদের ক্ষেত্রে ৬৫ করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে সরকার সেটা মেনে নিয়েছে।
কিন্তু কর্মকর্তাদের বিষয়ে এখনো মানছে না, সে হিসেবে এটা সরকারি নিয়মে পড়ে না। জন্মতারিখ অনুযায়ী রিটায়ার্ডের নিয়ম; কিন্তু কারও যদি মার্চে মেয়াদ শেষ হয়, তাহলে বাকি সেশনের ক্লাসগুলো কে নেবে! এটাকে তারা (ইউজিসি) বলছে সেশন বেনিফিট। ক্রয় পরিকল্পনা না থাকা যেটা বলা হয়েছে, সেটা ঠিক না; পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের বরাদ্দ দেওয়া হয় না।’