তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংক খাতে কৃষিঋণের স্থিতি বা পরিমাণ ৫২ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা, এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকগুলো সর্বশেষ ২০২২ সালে ৬৩ হাজার ৭১৯ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃ তফশিল করেছে। ফলে এসব ঋণ খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়নি। এরপরও গত বছরের শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা। পুনঃ তফশিল করা ঋণকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ২০ শতাংশের কাছাকাছি হতো।
এদিকে গত বছরের শেষে পুনঃ তফশিল করা ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। ফলে খেলাপি ঋণের চেয়ে পুনঃ তফশিল করা ঋণ এখন বেশি। এছাড়া ২০২২ সাল পর্যন্ত ৬৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা ঋণ অবলোপন করে আর্থিক প্রতিবেদন থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, স্বল্প ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করা কৃষকদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ৯ হাজার ৩৫৭টি মামলা (সার্টিফিকেট মামলা) করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক। যার বিপরীতে ব্যাংকগুলোর পাওনা ৩৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৪ হাজার ৩৯৮টি মামলা রয়েছে, যেগুলোর প্রতিটির পাওনা ১ লাখ টাকার নিচে। বাকি মামলা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। প্রায় ৫৭ হাজার মামলা করেছে ব্যাংকটি।
ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যাচ্ছে শিল্প খাতে মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো শিল্প খাতে মেয়াদি ঋণ বিতরণ করেছিল ৭২ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায় করতে পেরেছিল ৬৪ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের শিল্প ঋণ বিতরণ ও আদায়ের চূড়ান্ত হিসাব এখনো প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট খেলাপি ঋণের ৫৫ শতাংশই উৎপাদনশীল শিল্প খাতের। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে জাহাজ ভাঙা ও নির্মাণ খাত। এ খাতে বিতরণকৃত ঋণের ২২ দশমিক ৪৩ শতাংশই এখন খেলাপি। এছাড়া তৈরি পোশাক খাতে খেলাপি ঋণের হার ১১.১২ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ১১ দশমিক ৫৪ ও চামড়া শিল্পের ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ ঋণখেলাপি। দেশের মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে কৃষি খাতের অংশ মাত্র ২ দশমিক ৯০ শতাংশ।