মহানবীর আদর্শ অনুসরণেই সফলতা-শান্তি নিহিত: প্রধানমন্ত্রী


, আপডেট করা হয়েছে : 30-09-2023

মহানবীর আদর্শ অনুসরণেই সফলতা-শান্তি নিহিত: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ অনুসরণের মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।’ আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।


শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও ওফাতের পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত ১২ রবিউল আউয়াল তথা ঈদে মিলাদুন্নবী বিশ্ববাসী, বিশেষত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত দিন। এ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ বিশ্ববাসীর জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় এবং এর মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।’


সরকারপ্রধান বলেন, ‘মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হযরত মুহাম্মদকে (সা.) বিশ্বজগতের হেদায়েত ও নাজাতের জন্য ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ তথা সারা জাহানের রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। নবী করিম (সা.) সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে নবী, আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য কেবল রহমতরূপে প্রেরণ করেছি।’ (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত ১০৭)। মুহাম্মদ (সা.) এসেছিলেন তওহিদের মহান বাণী নিয়ে। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, পাপাচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তি, শান্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন।’


শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন এবং মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন। বিশ্বশান্তির অগ্রনায়ক রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, নাগরিকদের মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ নানান দিক বিবেচনা করে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন মানব ইতিহাসের প্রথম প্রশাসনিক সংবিধান ‘মদিনা সনদ’। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.) এর অনবদ্য ভূমিকার আরেকটি অনন্য স্মারক হুদায়বিয়ার সন্ধি। বাহ্যিক পরাজয়মূলক হওয়া সত্ত্বেও কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তিনি এ সন্ধিতে স্বাক্ষর করেন। তার অমিত সাহস, ধৈর্য ও বিচক্ষণতা তখনকার মানুষকে যেমন বিমুগ্ধ করে, তেমনি অনাগত মানুষের জন্যও শান্তি প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’


বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হুদায়বিয়ার চুক্তির মাধ্যমেই মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর ঘর কাবা শরিফ জিয়ারত করার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। মহানবী (সা.) এর শান্তিপূর্ণ মক্কা বিজয় মানব ইতিহাসের আর এক চমকপ্রদ অধ্যায়। কার্যত তিনি বিনা যুদ্ধে, বিনা রক্তপাতে ও বিনা ধ্বংসে মক্কা জয় করেন। শত অত্যাচার-নির্যাতন ও যুদ্ধ করে আজীবন যে জাতি নবী করিম (সা.)কে সীমাহীন কষ্ট দিয়েছে, সেসব জাতি ও গোত্রকে মক্কা বিজয়ের দিন তিনি অতুলনীয় ক্ষমা প্রদর্শন করে এবং তাদের প্রতি উদার মনোভাব দেখিয়ে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমা ও মহত্ত্বের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার এমন নজির বিশ্বে দুর্লভ। মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য অনিন্দ্য সুন্দর অনুসরণীয় শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন, যা প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষের জন্য মুক্তির দিশারী হিসেবে পথ দেখাবে।’


শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে মহানবী (সা.) এর অনুপম জীবনাদর্শ, তার সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ এবং ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় ও কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে বলে আমি মনে করি।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি, মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে মহানবী (সা.) এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দান করুন, আমিন।’



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার