লাগামহীন সবজির বাজার। বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করা হলেও কমছে না দাম। এই পরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন। গাজর, শিম, ঢ্যাঁড়স, পটোল, বেগুন, আলুসহ প্রতিটি সবজির দাম আকাশছোঁয়া। বাড়তি দামে হাঁসফাঁস অবস্থা ক্রেতাদের। তবে হাসছেন ব্যবসায়ীরা।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গাজর ১৮০, শিম ২০০, টমেটো ১৬০, করলা ১০০, মুলা ৬০, বেগুন ৬০-৭০, আলু ৫০, পটোল ৬০, ঢ্যাঁড়স ৫০, রসুন ২৮০, পেঁয়াজ ৯০, ওল ৮০, ফুলকপি ১২০, কুমড়া ৫০, পেঁপে ৩০-৪০ ও কাঁচাকলা ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দাম বেড়েছে সব ধরনের সবজির। এদিকে মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০, সোনালি ৩৫০-৩৬০, লেয়ার ৩৫০ ও দেশি মুরগি ৫০০-৫৫০ টাকায়।
বাজার করতে আসা কাজল আহমেদ বলেন, ‘সবজির বাজারে যেন আগুন লেগেছে। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ, মাছ-মাংস বাদ দিলাম। সবজির দামও যদি এভাবে বেড়ে যায়, তাহলে কী করব বুঝতে পারছি না। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর ওপর আবার দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি। সব মিলিয়ে কষ্টের মধ্যে দিন কাটছে।’
রাসেল আহমেদ বলেন, ‘সব সবজির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে একটু কম ছিল। আজ অনেক বেড়েছে। ১ হাজার টাকা নিয়ে বাজারে এসেছি। সবজি কিনতে গিয়ে সব ফুরিয়ে গেছে। এভাবে সবকিছুর দাম বাড়তে থাকলে বাজার করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।’ আজমত আলী বলেন, ‘আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। প্রতিদিন যা আয় হয় তা দিয়ে সংসারের অন্যান্য খরচ ও ওষুধ কিনতে ফুরিয়ে যায়। বাজার করব কী দিয়ে?’
ব্যবসায়ী ফারুক আলী বলেন, ‘দিনে দিনে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে। আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। দাম কমার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।’ সবজি ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। বেশি দামে কিনে আনছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সবজির দাম এত বাড়বে আমরাও ভাবতে পারিনি। কিছুদিন আগে টানা বৃষ্টিতে অনেক মাঠ ডুবে সবজিখেত নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে দাম বেড়েছে।’
জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু বলেন, ‘আমরা বাজার মনিটরিং করছি। অসাধু ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে না। যেসব ব্যবসায়ী বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’