মুজিব বর্ষ উপলক্ষে নির্মিত রাজশাহীর পুঠিয়ার বারইপাড়া তালুকদার গ্রাম আশ্রায়ণ প্রকল্পে হোজা নদীর ধারে আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ না করে ৯ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৭ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার তালুকদার গ্রাম আশ্রায়ণ প্রকল্পে টেন্ডার নং-৫১.০১.০০০০.০২৪.১৪.০১২.১৯ (অংশ-১) ১৬১১, তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ সালের ২০২১-২২ অর্থ বছরে এইচবিবি ১ম পর্যায় প্রজেক্টে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে নির্মিত তালুকদার গ্রাম আশ্রায়ণ প্রকল্পসহ আশেপাশের গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য পূর্ব বারইপাড়া তালুকদার গ্রাম পাকারাস্তা সংলগ্ন নজিরের বাড়ি হতে পূর্ব বারইপাড়া বাইতুন নুর জামে মসজিদ পর্যন্ত ১ হাজার মিটার রাস্তায় এইচবিবি করণ প্রকল্পের টেন্ডার হয়। অশ্রায়ন প্রকল্পের বাড়ি ঘর ও রাস্তা হোজা নদী ভাংঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য ১৮০ মিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণে টেন্ডার প্রাপ্ত হয়ে রাজশাহীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাহিন এন্টার প্রাইজ টেন্ডার প্রাপ্ত হয়ে আইটেম কোর্ড ৯ নম্বরে ডেসক্রিপশন অফ আইটেম আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল ১৮০ মিঃ (৬০০ ফিট) ইউনিট রেট ৫ হাজার ২ শত ৯২ টাকা। মোট টাকা ৯ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৭ টাকা।
আশ্রায়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী আনোয়ার হোসেন, মর্জিনা বেগম, শাপলা বেগম ও মনোয়ারা বেগম জানান, এখানে এসবিবি রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু কোন আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল তৈরি করা হয়নি।
ইতোমধ্যেই স্থানীয় এক সাংবাদিক এই কাজের তথ্য চেয়ে আবেদন করলে তার জবাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা জানান, প্রথম পর্যায়ের কাজে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণে কোন বরাদ্দ নাই। তবে ২য় পর্যায়ে ২১০ মিটার রিটানিং ওয়াল নির্মানের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু তিনি কৌশলে তথ্য গোপন করে পুরো তথ্য প্রদান করেননি।
এ বিষয়ে বারইপাড়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের মাদরাসা সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদুর রহমান জানান, কোনো রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়নি এখানে। এর বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে বারইপাড়া সংশিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিলন রহমান জানান, তালুকদার গ্রামে কোথাও আরসিসি রিটেইনিং ওয়ালের কাজ করা হয়নি। তবে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দে হোজা নদীর ধারে সামান্য রিটেইনিং ওয়াল আমি তৈরি করে দিয়েছি।
পুঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফ খাঁন ঝন্টু জানান, আশ্রায়ণ প্রকল্পে কোন রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়নি। আমি সংশিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান। কিন্তু আমাদের দূরে রেখে সব কাজ করা হয়েছে।
মেসার্স সাহিন এন্টার প্রাইজের মালিক বিপ্লব হোসেন জানান, আপনি সিডিউল তুলে আমার সাথে দেখা করেন। তারপর সেই বিষয়ে কথা বলবো। তাছাড়া কোন কথা হবেনা।
পুঠিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, আরসিসি রিটেইনিং ওয়ালের কাজ করা হয়নি। সেই টাকা দিয়ে রাস্তা এক্সটেনশন করা হয়েছে। কাজ সমাপ্ত হলেও প্রকৃত কাজ বুঝে নেননি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আগের ইউএনও স্যার বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ, কে, এম, নূর হোসেন নির্ঝর জানান, বিষয়টি সাবেক ইউএনও থাকতে হয়েছে, তাই এই বিষয়টি আমার জানা নাই। এই এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারবো না। তবে আরসিসি রিটেইনিং ওয়ালের টেন্ডার হওয়ার পর সেই অর্থ অন্য কাজে ব্যবহারের নিয়ম নাই।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম হিরা বাচ্চু জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে কাজ না করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।