বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনার সরকারকে অন্ধ সমর্থন দিয়ে গেছে ভারত। তার সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থপাচার, অপশাসন, খুন-গুমের মতো নানা অপরাধ-অনিয়মের অভিযোগ সত্ত্বেও ভারত তার অবস্থান বদল করেনি। তার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতে চলে যাওয়ার পর নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিচারের জন্য হাসিনাকে বাংলাদেশ ফেরত চাইলে তারা কী অবস্থান নেবে, সেটাও অস্পষ্ট। তার লাল পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর তাকে ভারত কীভাবে আশ্রয় দেবে, সেটা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনকে দেড় দশক ধরে অন্ধভাবে সমর্থন জুগিয়ে গেছে ভারত। ছাত্র–জনতার টানা আন্দোলনের মুখে শেষমেশ ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে সামরিক কার্গো উড়োজাহাজে করে সেই ভারতেই পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এর আগে মাত্র ২০ দিনে ৫৪২ জনের প্রাণহানি (এখন পর্যন্ত মোট প্রাণহানি ৭৫৭) হয়েছে।
বছরের পর বছর ‘সাউথ ব্লক’ হাসিনার রাজনৈতিকভাবে দুর্নীতিপরায়ণ সরকারের ব্যাপারে অন্ধ হয়ে থেকেছে। এটি তার (ভারতের) ঘনিষ্ঠ মিত্র এই সরকারকে দেশ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচার করতে সহায়তা করেছে, যা আনুমানিক ১৫০ বিলিয়ন (১৫ হাজার কোটি) ডলার বা ১৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি (১ ডলার=১১৮ টাকা হিসাবে) টাকা। এই অর্থ বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের দ্বিগুণ।
বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে নিয়ে নিজ অবস্থান বদলাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে ভারত, বিশেষ করে গত কয়েক বছরে। শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে নরেন্দ্র মোদির সরকার কখনোই বাংলাদেশ বা এর জনগণকে বন্ধু বানানোর চেষ্টা করেনি। এর পরিবর্তে হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জন্য ভারত তার সুনাম ও উজ্জ্বল জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে ঝুঁকি নিতে তৈরি থেকেছে।