রাবিতে দুই বিভাগের সংঘর্ষ, আহত ৩৪


স্টাফ রিপোর্টার : , আপডেট করা হয়েছে : 19-11-2024

রাবিতে দুই বিভাগের সংঘর্ষ, আহত ৩৪

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা শেষে স্লেজিং (কটু কথা) করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষক-সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৪ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। 


সোমবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের পাশে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে মার্কেটিং ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এতে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ঘটনায় আহত শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত সাংবাদিক আবু সালেহ শোয়াইব বণিক বার্তা পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। এছাড়া দুই বিভাগের অন্তত ৩৪ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মাঠের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভাগ দুটির শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বিকাল থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান করে। এতে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের পাশে মুখোমুখি অবস্থান নেয় এবং একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও দুই বিভাগের শিক্ষকরা দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের রাউন্ড-১৬ এ মার্কেটিং বিভাগ ও আইন বিভাগের খেলা হয়। এতে মার্কেটিং বিভাগ ১-০ গোলে জয়ী হয়৷খেলা চলাকালে উভয়পক্ষের দর্শক স্টেডিয়ামে অবস্থান করছিলেন। গোল হওয়ার একপর্যায়ে উভয়পক্ষ একে-অপরকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে শ্লোগান দিলে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। খেলা শেষে স্টেডিয়াম গেটে আইন ও মার্কেটিং বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী তর্কে জড়ায়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। 

এ সময় আইন বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুর রহমান মাথায় ইটের আঘাত পেয়ে আহত হন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল বের করেন। এ সময় মিছিলের ভিডিও ধারণ করতে গেলে সাংবাদিক আবু সালেহকে মারধর করে মুঠোফোনের ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক মাফরুহা সিদ্দিকী লিপি বলেন, এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ চিকিৎসা নিয়েছেন এখানে। এছাড়াও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক)  হাসপাতালে অন্তত ৯ চিকিৎসা নিয়েছে।

জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, মঙ্গলবার দুই বিভাগের ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া আজ আলাদা করে দুই বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর বলেন, আমি রাজশাহীর বাইরে আছি। তবে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটা নিয়ে আলোচনা করছে। যথা সময়ে পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা প্রয়োজনের থেকে একটু দেরিতে এসেছে। সময়মতো আসলে হয়তো এমন পরিস্থিতি না-ও হতে পারতো। তবে এখন পুলিশ এবং সেনবাহিনী ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে। 

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফুটবল টুর্নামেন্ট আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। আমরা এটা নিয়ে মিটিং করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষার্থে সবদিক ভেবে সিদ্ধান্ত নেবো।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার