চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা এলাকায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মহানগর প্রভাতী ট্রেনের ধাক্কায় একটি মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হয়েছেন। তাদের একজন জিয়াউল হক সজিব। তাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন বাবা হামিদ হোসেন।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে হামিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছেলে স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করত। দুই ছেলে ও এক মেয়ে আমার। এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সজিব এমইএস কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
ADVERTISEMENT
হামিদ হোসেনের পাশে বসেই কান্না করছিলেন সজিবের ছোট ভাই তৌসিফ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাই যখন বের হয় আমি ঘুমে ছিলাম। ভাই আমাকে অনেক আদর করত। যাওয়ার সময় শুধু বলছে, ভাই যাচ্ছি। এই বলাই যে শেষ বলা হবে কে জানত।
তৌসিফ বলেন, আর এন জে কোচিং সেন্টারের পক্ষ থেকে ভ্রমণে গিয়েছিল তারা। রেল লাইনের মানুষ কোথায়। তারা বাঁশ ফেললে আমার ভাই মারা যেত না। এই দুর্ঘটনা ঘটত না। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
হাসপাতালের বারান্দায় কান্না করছিলেন দুর্ঘটনায় আহত তানভীর হোসেন হৃদয়ের মা লাকি আক্তার। তিনি বলেন, গত রাতে হৃদয়কে ভ্রমণে যেতে প্রথমে নিষেধ করেছিলাম। ওরা বেশি বলার কারণে হৃদয়কে ভ্রমণে যেতে বলেছি।
তানভীর হাসান হৃদয় হাটহাজারীর আমান বাজার শিকারপুর এলাকার প্রবাসী আব্দুর রহমানের ছেলে। সে হাটহাজারীর কে সি শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী। হৃদয় বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হৃদয় অন্যদের সঙ্গে মাইক্রোবাস যোগে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা এলাকায় ভ্রমণে যান আমান বাজারের আর এন জে কোচিং সেন্টারের পক্ষ থেকে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাকি আক্তার বলেন, আমার হৃদয় ছাড়া কেউ নেই। তাকে ছাড়া আমি কীভাবে থাকব?
এদিকে দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের স্বজনরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে এসে ভিড় করেছেন।
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত ৬ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।