রাজশাহীর পবা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দামকুড়া পশুহাট দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবারও চালু করা হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে গরু ও ছাগলের ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে হাটটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আয়োজক কমিটি। উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই উদ্বোধনী দিনে হাটে ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ্য করা যায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সদস্য, দামকুড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং হাটের ইজারাদার শাহজাহান আলী। তিনি জানান, সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তিনি এক বছরের জন্য ১ কোটি ১১ লাখ ১১ হাজার ১১১ টাকায় হাটটি ইজারা নিয়েছেন।
হাটে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে গরু প্রতি ৪০০ টাকা ও ছাগল প্রতি ২০০ টাকা। বিক্রেতাদের জন্য কোনো টোল না থাকায় এতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। উদ্বোধনী দিনে প্রথম গরু ও ছাগল বিক্রয়কারী ও ক্রেতাকে দেওয়া হয় এক হাজার টাকা এবং একটি করে ছাতা উপহার।
১৯৮৯ সালে চালু হওয়া দামকুড়া পশুহাটটি ২০০৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। শাহজাহান আলীর অভিযোগ, “স্বৈরাচার সরকারের আমলে নগরীর সিটি হাট ও দামকুড়া হাট একই দিনে বসার অজুহাতে কৌশলে হাটটি বন্ধ করে রাখা হয়। এতে সরকার অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।” তিনি আরও জানান, এবার রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যেই হাটটি আবারও চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উদ্বোধনী দিনে প্রথম ছাগল বিক্রি করেন আলোকছত্র গ্রামের বাসিন্দা নূর আলমের ছেলে আশিক। ছাগলটি ৬ হাজার ৪০০ টাকায় কিনে নেন দামকুড়া গ্রামের মনসুর আলী। উভয়েই উপহার হিসেবে পান এক হাজার টাকা ও একটি করে ছাতা। ছাতা হাতে খুশিমনে বাড়ি ফেরার পথে মনসুর আলী বলেন, “আমি এই হাটের প্রথম ক্রেতা। উপহার পেয়ে খুব ভালো লাগছে।”
দোয়া পরিচালনা করেন দামকুড়া হাট জামে মসজিদের পেশ ইমাম আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দামকুড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক কিরণ, সদস্য সচিব নওশাদ আলী, হাট ইজারা কমিটির সদস্য ফিরোজ কবিরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও হাটে আগত প্রচুর ক্রেতা-বিক্রেতা।
হাটের পুনরায় চালুর ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি আবারও রাজশাহীর পশু বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।