সিরিয়ায় বেদুইন ও দ্রুজ সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত ৩০


, আপডেট করা হয়েছে : 14-07-2025

সিরিয়ায় বেদুইন ও দ্রুজ সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত ৩০

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সুয়েইদায় বেদুইন সুন্নি গোত্র এবং দ্রুজ ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০ জন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।


সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে লন্ডনভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সংঘর্ষে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৩৭ জন ছাড়িয়ে গেছে।


সুয়েইদা শহরের সরকারি হাসপাতাল জানিয়েছে, সংঘর্ষের পর তাদের মর্গে অন্তত ১৫ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পাশের দেরা’য় শহরের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।


সংঘর্ষের পেছনে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিরাপত্তাহীনতাকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। গত ডিসেম্বরেই সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন। ইসলামপন্থী বিদ্রোহী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) রাজধানী দামেস্কে হামলা চালিয়ে আসাদ সরকারের পতন ঘটায়, যা দেশটির ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে।


সেই থেকেই বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সহিংসতা বেড়ে যায়। বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনী এবং দ্রুজ যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষ একাধিকবার রক্তক্ষয়ী রূপ নেয়। এপ্রিল ও মে মাসেও এমন সংঘর্ষে প্রাণ হারান অর্ধশতাধিক মানুষ।


সুয়েইদার গভর্নর মুস্তাফা আল-বাকুর শহরবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, 'জাতীয় পুনর্গঠনের লক্ষ্যে সংযমের বিকল্প নেই।' একই বার্তা দিয়েছেন দেশটির আধ্যাত্মিক নেতারাও।


দ্রুজ সম্প্রদায়ের সদস্যরা মূলত লেবানন, জর্ডান ও ইসরায়েলে বসবাস করলেও সিরিয়ায় তাদের একটি বড় অংশ রয়েছে। আসাদ শাসনামলে তারা বেশিরভাগ সময় নিরব থাকলেও নতুন সরকারের অধীনে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একাধিক দ্রুজ ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাদের ভীতির প্রধান কারণ শারীরিক হামলা নয়, বরং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অভাব।


এদিকে, সিরিয়ায় সহিংসতা বাড়ার মধ্যেই পশ্চিমা বিশ্বের কূটনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্র হায়াত তাহরির আল-শামকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। একই সময়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সিরিয়ায় সফর করেন—যা ১৪ বছর আগে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর প্রথম কোনো ব্রিটিশ মন্ত্রীর দেশটিতে যাত্রা।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার