রাজশাহীতে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম


, আপডেট করা হয়েছে : 13-08-2025

রাজশাহীতে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম

রাজশাহী, ১৩ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : রাজশাহী মহানগর ও আশেপাশের উপজেলা গুলোর বাজারে আলু ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল ধরনের সবজির দাম বেড়েছে লাগামহীনভাবে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। টানা বৃষ্টিতে আমদানি কম থাকায় সবজির দাম বেড়েছে এমন দাবি ব্যবসায়ীদের। 


ক্রেতারা বলছেন, এখনই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কঠোর মনিটরিং করে সবকিছুর দাম স্বাভাবিক করা প্রয়োজন। নাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম রাতারাতি বৃদ্ধি করে কম আয়ের মানুষজনকে আরো ভোগান্তির মধ্যে ফেলবে। 


সরজমিনে মহানগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি যে দামে বিক্রি করা হয়েছে তার থেকে প্রত্যেকটি সবজির দাম ৩০টাকা থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবজির ধরণ অনুযায়ী কোনো কোনো সবজির দাম বেড়েছে ২/৩ গুণ। তারপরও প্রয়োজনীয় হওয়ায়  অল্প সবজি নিয়ে বাসায় ফিরছেন ক্রেতারা। 


মহানগরীর লক্ষীপুর কাঁচাবাজারে সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করলা বিক্রি করা হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। অথচ করলা আগে বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে। ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। কয়দিন আগে ঝিঙ্গা ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। পটল ৬০ টাকা কেজি। আগে পটল বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। আগে বেগুনের দাম দিল ৪০ থেকে ৫০টাকা কেজির মধ্যে। লাউ ধরন ভেদে প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আগে ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। কুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছিল। চিচিঙ্গা ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল। বর্তমানে দাম বেড়ে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ৩০-৩৫ টাকা কেজির বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। এছাড়াও পেঁপে, এবং বিভিন্ন ধরণের শাক যেমন, সবজু ও লাল শাক, পুঁই শাকসহ অন্যান্য শাকের দামও কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। 


পেঁয়াজ আগে ৫০/৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হলেও বর্তমানে দাম বেড়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি ও বড় সাইজের রসুনের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এর আগে মিষ্টি কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিলো। আলুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে।


৪০/৪২ টাকা হালির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা হালিতে। সাদা ডিম ৪৬ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। আগে ছিল ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা হালি। আটার দামও কেজিতে বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। মসুর ডালের দামও বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা।   


শুধু লক্ষীপুর কাঁচাবাজার নয়, নগরের দাসপুকুর বউ বাজার, কোর্ট স্টেশন বাজার, সাহেব বাজার, নওদাপাড়াসহ বেশ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে সবজি পূর্বের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। 


সবজি কিনতে আসা আব্দুল্লাহ বলেন, কয়দিন আগে সবজিসহ সবকিছুর দাম অনেক কম ছিল। কিন্ত এখন বেড়ে গেছে। হঠাৎ দাম বাড়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। দ্রুত দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। রনি নামের অপর এক ক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের বিপাকে ফেলতে চাইছে। সরকারের এখনই উচিত এদের থামিয়ে দেওয়া। 


রিক্সাচালক মনি বলেন, বুঝছিনা ভাই কেন দাম বাড়ছে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমরা দিনমজুররাতো সমস্যায় পড়বো। এতদিন দাম ভালোই ছিল।  শুধু রাজশাহী মহানগরই নয় জেলার ৯টি উপজেলার বাজারগুলোতেও সবজির দাম বেড়েছে বলে জানা গেছে। 


সবজি বিক্রেতা আঙ্গুর বাসস’কে বলেন, দেখেন ইচ্ছে করে আমরা দাম বাড়াই না। পাইকারি বাজারেই দাম বেশি। তাই খুচরা বাজারে কিছু লাভ রেখে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের কিছু করার নেই। আরেক সবজি বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারে দাম আগের থেকে বেশি হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করা লাগছে। কম দামে কিনতে পারলে কম দামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারবো। পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হলে তিনি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বাসসকে বলেন, টানা বৃষ্টিতে  আমদানি কিছুটা কম হয়েছে। তাই বাজারে দাম বেড়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে দাম আরো বাড়বে।  


জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাস বাসস’কে বলেন, ডিমের দাম কেন এত বেড়েছে সেই ব্যাপারে বাজার মনিটরিং করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হবে।  



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার