দীর্ঘ দিন ধরে আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন রাজমিস্ত্রি সজল আলী (২২) ও কিরণ আলী (২২)। দুজনই রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিল্লী এলাকায় একটি সরকারি প্রকল্পে কাজ করছিলেন। থাকতেন সেখানেই।
এদিকে নির্মাণ সাইটের পাশেই ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা রয়েছে। দ্বিতল ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছিল শাখাটি। এজেন্টের বাড়িও বেশ দূরে। আবার এলাকাটি একেবারেই প্রত্যন্ত। সন্ধ্যা নামলেই নিঝুম চারপাশ। নৈশপ্রহরীর তৎপরতাও সীমিত।
এসব মাথায় রেখেই এজেন্ট ব্যাংক লুটে নিখুঁত পরিকল্পনা সাজান তারা। সাইটে লোহা কাটার যন্ত্রও ছিল। গভীর রাতেই সেই যন্ত্র নিতে গিয়ে দেখে ফেলে সহকর্মী কিশোর। তাকে সঙ্গে নিয়েই ব্যাংক লুটে নেমে পড়েন দুই যুবক।
গত ২৫ আগস্ট দিবাগত রাতে এজেন্ট ব্যাংকটিতে হানা দেয় তিনজন। কিন্তু কোনো টাকা পয়সা পাননি তারা। সেখান থেকে ২১টি এটিএম কার্ড, ২২টি বিভিন্ন দেশের নোট, কিছু চেক বই, কম্পিউটার সামগ্রী, ফিঙ্গারপ্রিন্ট যন্ত্র নিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে এই ঘটনায় তানোর থানায় মামলা দায়ের করেন এজেন্ট ব্যাংকের স্বত্বাধিকারী সেফাউর রহমান। ওই রাতেই আসামিদের ধরতে অভিযানে নামে তানোর থানা পুলিশ। জড়িতদের শনাক্ত করে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থানও নিশ্চিত হয়।
চারঘাটের চন্দনশহর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে সজল আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই রাতেই উপজেলার মেরামতপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন আরেক অভিযুক্ত কিরণ আলীও। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার পিরোজপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের কিশোর সহযোগীকে। তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ।
তানোর থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, গত ২৬ আগস্ট দিবাগত রাতে উপজেলার বিল্লি বাজার এলাকার ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকে মালামাল লুট হয়ে যায়। ঘটনার চার দিন পর থানায় মামলা করেন এজেন্ট সেফাউর রহমান। এরপরই অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুরের দিকে তাদের আদালতে তোলা হয়।
ওসি বলেন, গ্রেপ্তার সজল আলী ও কিরণ আলীর পরিকল্পনায় এই কাণ্ড। উদ্দেশ্য জেনে যাওয়ায় পরে ওই কিশোরকে সঙ্গে নেয় তারা। ঘটনার পর আত্মপোনে চলে যায় তারা। গ্রেপ্তারের পর দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।