রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে স্কুলে বল যাওয়ায় ১০ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছে প্রহরী। এই ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীর বাবা গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এছাড়াও গোদাগাড়ী মডেল থানার মামো দায়ের করলে কাকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র স্কুল প্রহরীকে গ্রেপ্তার করে।
আহত ওই শিক্ষার্থীর নাম নাসিম (১০)। সে উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের এনায়েতুল্লাপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের রুহুল আমিন দুলালের ছেলে। নাসিম রাজশাহী নগরীর হাফেজুল কারিম মাদ্রাসার ছাত্র।
রুহুল আমিন জানান, আমার ছেলে ছুটিতে বাসায় এসে গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সৈয়দপুর প্রাইমারী স্কুল মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। এসময় অসাবধানতা বশত স্কুলের সীমানার ভিতর বল চলে যায়। এতে এনায়েতুল্লাপুর গ্রামের সাহাবুদ্দিনের ছেলে ও ওই স্কুলের প্রহরী মোজাম্মেল নাসিমকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম হয়।
পরে স্কুলের প্রহরি মোজাম্মেল এর নিকট মারপিটের ঘটনা সম্পর্ক জানতে গেলে মোজাম্মেল তাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মারপিটসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন।
গত শুক্রবার এই বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন । এছাড়াও কাকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দিলে তার সত্যতা যাচাই করে মামলা রেকর্ড হয় । এতে পুলিশ সোমবার দিবাগত রাতে স্কুল প্রহরী মোজ্জাম্মেলকে তার বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
কাকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ কবির হোসেন বলেন, মারধরের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়। পরে মামলা রেকর্ড হলে তাকে বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জানে আলম বলেন, এমন ঘটনার একটি অভিযোগ পেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সরেজমিনে তদন্ত করতে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার লাইলা বানু বলেন, অভিযোগটি সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) হাতে পেয়েছি। তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করা হবে বলে জানান।
এদিকে, সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে শিশু বাচ্চাকে বেধড়ক মারপিটের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্কুলপাড়ার অনেকেই।
স্থানীয়রা বলছেন, স্কুলে সময়মতো কোন শিক্ষক শিক্ষিকা উপস্থিত হয়না। যেকারনে ঠিকমতো পড়ালেখাও হয়না। স্কুলের শিক্ষকরা ইচ্ছেমত স্কুলে আসা যাওয়া করে, তবুও আমরা এসব অনিয়মের কোন প্রতিবাদ করিনি। স্কুলের প্রহরী মোজাম্মেলেরও সময় কাটে অলসতায়। প্রতিদিন স্কুলের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের দিয়ে পায়খানা পরিস্কার, স্কুলের সিমানার ভিতর ঝাড়ু দেওয়াসহ আবর্জনা ময়লা পরিস্কার করিয়ে নেয়।
আর এসব কাজ না করলে ভয়ভিতীসহ মারপিটও করেন স্কুলের শিক্ষকরা। যেকারনে অনেক সময় এসব ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতেও অনিহা প্রকাশ করে। তারপরও অভিভাবকদের চাঁপে তারা স্কুলে যায়।
সামান্য স্কুলের সিমানায় ফুটবল গিয়েছে একারনে একজন শিশুকে এভাবে মেরে শরীরে কালো দাগ পড়ে গিয়েছে। অতিঅবিলম্বে অভিযুক্ত মোজাম্মেলকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণেরও দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।