রাজশাহীর তানোরে বিএনপির আলোচনা সভার মঞ্চে সভাপতিত্ব করা নিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে তোপের মুখে পালিয়ে বাঁচেন সভার প্রধান অতিথি অবসরপ্রাপ্ত মেজর শরিফ উদ্দিন।
মঙ্গলবার বিকেলের দিকে উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের মাদারিপুর জিয়া পরিষদ চত্বরে বিএনপির আলোচনা সভায় এ ঘটনা ঘটে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেতাকর্মীরা।
এদিকে, মারামারি ঘটনায় সভা পণ্ড হওয়ার জন্য মেজর শরিফ ও আহ্বাবায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান ছাড়াও পৌর সদরের কিছু নেতাদের দায়ী করছেন কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপি দু’গ্রুপের বিবাদমান দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মরহুম ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ভাই বিএনপি নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফউদ্দিন মঙ্গলবার বিকেলে আলোচনা সভা করার সিদ্ধান্ত নেন।
সভায় কোন ব্যানার বা চিঠি করা যাবে না মর্মে সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সভাপতি চাপড়া মহিলা কলেজের প্রভাষক জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউরের স্বাক্ষরিত চিঠি করা হয়।
এবং মঞ্চে ব্যানার সাটানো হয়। এমন পরিবেশে সভা শুরুতেই প্রভাষক জাহিদকে মঞ্চের সভাপতিত্ব ঘোষণার সাথে সাথেই শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে তুমুল হাতাহাতির শুরু হয়।
মারপিটে তানোর পৌর সদরের কিছু নেতা ও প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন বলে নিশ্চিত করেছেন কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির বৃহত্তর অংশের সভাপতি খলিলুর রহমান খলিল।
এতে গুরুতর আহত হয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী রাজ্জাক। তাকে সন্ধ্যার পরে দেখতে যান খলিলসহ অন্য নেতারা।
সভাপতি খলিল জানান, যেখানে মেজর শরিফ জানিয়ে দিয়েছেন কোন চিঠি ব্যানার করা যাবে না। কিন্তু জাহিদ প্রভাষকের পক্ষে ইউপির তেমন নেতাকর্মী না থাকলেও পৌর সদরের কিছু নেতাদের ইন্ধনে এসব ঘটনার জন্ম দিচ্ছেন। আবার মঞ্চে জাহিদকে সভাপতিত্ব করার ঘোষণা দেওয়া মাত্রই চরম উত্তেজিত হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা। তবে, মেজর পালিয়ে যাননি। তিনি বক্তব্য দিয়ে দ্রুত সভা শেষ করেন।
আরেক অংশের কমারগাঁর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রভাষক জাহিদ বলেন, আমি মেজরের সাহেবের কাছে ছিলাম। মারপিট হয়নি, ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান হান্নান বলেন, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির দুটি পক্ষ রয়েছে। মঞ্চে সভাপতিত্ব নিয়ে কথাকাটা কাটির এক পর্যায়ে ঠ্যালাঠেলি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কামারগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতারা জানান, যেখানে দুটি পক্ষ রয়েছে। সেখানে অন্য পক্ষের সভাপতি প্রভাষক জাহিদের সভাপতিত্বে সভা শুরুর নাম করা হয়। মঞ্চে অন্য কাউকে সভাপতির নাম বললে মারপিট হতো না। এটা মেজর শরিফের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাব। তিনি বিবাদমান গ্রুপের সমাধান না করে জাহিদ গ্রুপকে সমর্থন দিতে মরিয়া। তাকে বোঝা উচিত ছিল ইউপির বৃহত্তর অংশ খলিলের পক্ষে। পৌর সদরের কিছু নেতা আছে যারা প্রায় জায়গায় বা সভা সমাবেশে গোলমাল করেন।
এ ব্যাপারে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ হয়নি।