ঈদুল আজহার ছুটি শেষে আজ ছাত্রছাত্রীদের পদভারে মুখরিত হবে দেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
ডেঙ্গু পরিস্থিতির প্রাদুর্ভাবের কারণে ইতোমধ্যে সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কেননা দিনের বেশির ভাগ সময়ে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় থাকবে ছেলেমেয়েরা। আর এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়। সেই কারণেই এই দুশ্চিন্তা।
অন্যদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকারের তরফেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুসারে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শনিবার প্রস্তুতের কাজ চলে। অবশ্য সচেতন প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা বৃহস্পতিবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন।
রাজধানীর উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জহুরা বেগম শনিবার যুগান্তরকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) স্থায়ী নির্দেশনা আছে। এরপরও এবারও সংস্থাটি থেকে ৫ দফা নির্দেশনা আসে। সেটির আলোকে স্কুলের মাঠ, ভবন, ফুলের টব, এসি এবং যেখানে পানি জমে থাকতে পারে, তা পরিষ্কার করা হয়েছে।
বাড়তি হিসাবে ভবনের ছাদগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। এরপর স্প্রে মেশিন দিয়ে ব্লিচিং পাউডার, নেপথলিন প্রভৃতির সংমিশ্রণে বানানো উপাদান প্রয়োজনীয় সবখানে ছিটানো হয়েছে। এ কাজ বৃহস্পতিবারই করা হয়েছে। রোববার শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ার ব্যাপারে স্কুল পুরোপুরি প্রস্তুত।
২৫ জুন থেকে বন্ধ আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ছুটির আগেই মূলত ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়। যে কারণে ২২ জুন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে বৈঠক হয়।
ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে ২৫ জুন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ৩ দফা সংবলিত নির্দেশনা জারি করা হয়। এরপর স্কুল খোলা উপলক্ষ্যে ৬ জুলাই মাউশি ৫ দফা সংবলিত আরেকটি নির্দেশনা জারি করে। তাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়
মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে, খোলার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার করার ব্যাপারে নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সবাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস উপযোগী করে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা প্রস্তুত করেছেন বলেই প্রত্যাশা রাখি। আর দ্বিতীয়ত, একটি প্রতিষ্ঠানপ্রধান সরকারের প্রতিনিধি এবং সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তাই তিনি শিক্ষার্থীদের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব করবেন বলেই প্রত্যাশা। এক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তা এবং অভিভাবকদের দায়িত্ব আছে। তারা যদি দুর্যোগকালীন সচেতন আর সহায়কের ভূমিকায় থাকেন, তাহলে পরিস্থিতি সুচারুরূপে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রকোপ থেকে শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে কর্মচারী, স্কাউটস, বিএনসিসি ও শিক্ষার্থী সমন্বয়ে এক বা একাধিক টিম গঠন করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা আছে।