কয়েক দিনের টানা বর্ষণ, পূর্ণিমার জোয়ার আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট কক্সবাজারের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সীমিত আকারে যান চলাচল শুরু হয়েছে। সকালে রোদ থাকলেও দুপুর থেকে আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে রাঙামাটি এলাকার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
কক্সবাজার শহরের ট্রিপ জোন অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিকু পাল বলেন, কক্সবাজার থেকে গ্রিন লাইন ও সোহাগ ছাড়া অন্যান্য পরিবহনের বাস সীমিত পরিসরে চলাচল শুরু করেছে। বেশির ভাগ বাস পেকুয়া-আনোয়ারা আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে কিছু ননএসি বাস চলছে।
চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, গত সোমবার থেকে কক্সবাজারে বন্যা দেখা দেয়। জেলার ৯ উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের অন্তত ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এর মধ্যে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার বেশির ভাগ নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। গত পাঁচ দশকের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বড় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ২ লাখ ৯৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। তবে সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান বলেন, আজও আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে কোনো সতর্কসংকেত নেই।
এদিকে রাঙামাটি সদর, রাজস্থলী, জুরাছড়ি, কাউখালী, নানিয়াচর, বিলাইছড়ি, বরকল, বাঘাইছড়ি এলাকার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যায় বাজার, স্কুল, মন্দির, সড়কের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে সবজিখেত ও বাগাবাগিচার। বন্যার কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে জনজীবনে। ইতিমধ্যে ২৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ হাজার ১০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় দুই শতাধিক স্থানে পাহাড়ধস হয়েছে। চার শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক, আসাম বস্তি-কাপ্তাই সড়কের বিভিন্ন এলাকায় সড়কের ওপর পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। ধীরে চলতে হচ্ছে যানবাহনকে। সড়কগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার গতির মধ্যে যান চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনকে রান্না করা খাবার বিতরণ করছে উপজেলা প্রশাসন।