রাজধানীতে প্রকাশ্যে মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত পথশিশুদের তালিকা করতে কাজ করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ বিষয়ে ডিএমপির সংশ্লিষ্ট উপকমিশনারদের (ডিসি) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তালিকা তৈরির পর সমাজসেবা অধিদফতর এবং বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টিও দেখভাল করবেন ডিএমপির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এমন উদ্যোগের ফলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শিশুদের নজরদারিতে রাখা অনেকটাই সম্ভব হবে বলে ধারণা করছে ডিএমপি।
ডিএমপির সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় সম্প্রতি চুরি-ছিনতাই-ডাকাতির মতো ঘটনা বেড়েছে। এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা। সেই সঙ্গে একটি গোষ্ঠী স্বার্থ আদায়ের জন্য মাদকসেবীদের ব্যবহার করে আসছে।
সূত্র জানায়, তালিকা তৈরির কাজ চলমান। ডিএমপির ৫০টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের এসব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। থানা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন জায়গায় যেসব পথশিশু রয়েছে, তাদের মাদক সম্পৃক্ততার বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক, অলিগলি, ফুটপাত ও পদচারী-সেতুর আশপাশে পথশিশুদের আনাগোনা দেখা যায়। পলিথিনে কিছু একটা ভরে তা মুখে ধরে শ্বাস নিতে থাকে, যাকে ড্যান্ডি বলা হয়। তাদের মধ্যে ড্যান্ডি সেবনকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া গাঁজা ও অন্যান্য মাদক তো রয়েছেই। তারা বিভিন্ন গ্রুপে একতাবদ্ধ হয়ে ড্যান্ডি বা গাম সেবন করে, যা চলতি পথে নগরবাসীর জন্য অনেকটাই ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ডিএমপি সূত্র আরও জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পথশিশুদের ব্যবহার করে কেউ যেন কোনও ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়েও বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। তালিকা তৈরির কাজ শেষে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হলে পথশিশুদের মাদকাসক্ত থেকে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে। এতে অপরাধপ্রবণতা অনেকাংশে কমে আসবে।
ডিএমপির একাধিক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনার সঙ্গে পথশিশুদের জড়িত থাকার খবর প্রায়ই পাওয়া যায়। তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে তারা আবার একই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। যদিও কোন থানায় কত পথশিশু রয়েছে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনও তথ্য নেই। তবু তাদের মাদক-সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তালিকায় উঠে এলে তা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) ড. খ. মুহিদ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পথশিশুদের মধ্যে যারা মাদকাসক্ত কিংবা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’