ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারকে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্যের শপথ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার জারি করা এক নির্বাহী আদেশে তিনি এই নির্দেশ দেন। ভাগনারের পাশাপাশি অন্য সব বেসরকারি সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকেও এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ভাগনারের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রয়াত প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় গত সপ্তাহে মারা যান। পশ্চিমা বিশ্ব এ ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড আখ্যা দিয়ে বলেছে, এর পেছনে পুতিনের হাত রয়েছে। তবে ক্রেমলিন আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমা বিশ্বের এই দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বিষয়টি ‘চরম মিথ্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
পুতিনের এই নির্দেশ গত শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে। পুতিনের এই নির্দেশনা ভাগনারসহ সব বেসরকারি সেনা সরবরাহকারী সংস্থার জন্য প্রযোজ্য। বিশ্লেষকেরা বলছেন, পুতিনের এই নির্দেশ মূলত এ ধরনের সংস্থাগুলোর ওপর আরও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ আরোপের প্রচেষ্টা।
ক্রেমলিনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই আদেশে বলা হয়েছে, যারা রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর হয়ে কাজ করছে কিংবা ইউক্রেনে পরিচালিত মস্কোর বিশেষ সামরিক অভিযানে যারা অংশ নিয়েছে, তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্যের শপথ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
পুতিন স্বাক্ষরিত আদেশে এই নির্দেশকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষার আধ্যাত্মিক এবং নৈতিক ভিত্তি তৈরির একটি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। উল্লিখিত শপথে একটি লাইন রয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, যারা এই আদেশের অন্তর্ভুক্ত, তারা তাদের কমান্ডার ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের আদেশ কঠোরভাবে অনুসরণ করবে।
এদিকে, ভাগনার বিদ্রোহ ঘোষণার পর বাহিনীটিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে চেয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো তাঁকে সেই কাজ করা থেকে বিরত রাখেন। এমনটাই দাবি করেছেন তিনি।
চলতি বছরের জুন মাসের ২৩-২৪ তারিখে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে ভাগনার। এমনকি তারা ইউক্রেনের রণক্ষেত্র ছেড়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রাশিয়ায় প্রবেশ করে সীমান্তবর্তী একটি সেনাঘাঁটিও দখল করে নেয়। পরে অবশ্য রাশিয়া সামরিক হস্তক্ষেপের আগেই লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় প্রিগোঝিন বিদ্রোহ স্থগিত করে বেলারুশে চলে যান। সঙ্গে ভাগনার বাহিনীর একাংশও চলে যায়।
বিদ্রোহের সময় পুতিন কড়া জবাব দিতে চেয়েছিলেন ভাগনারকে। কিন্তু বেলারুশের প্রেসিডেন্ট তাঁকে বুঝিয়ে শান্ত করেন। লুকাশেঙ্কো বলেন, সে সময় তিনি পুতিনকে প্রভাবিত করেছিলেন, যেন তিনি প্রিগোঝিন ও ভাগনারকে নিশ্চিহ্ন করে না ফেলেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি লুকাশেঙ্কো।