দেশের সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রের আগে আরও বেশি উন্নয়ন চায় জানিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘তাদের যদি বলা হয়, এক গ্লাস গণতন্ত্র খাবে না এক গ্লাস উন্নয়ন খাবে? তারা এক গ্লাস উন্নয়নই নেবে।’
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কার্নিভ্যাল হলে শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন আয়োজিত ‘সূচনা চূড়ান্ত মূল্যায়ন ফলাফল প্রচার’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এম এ মান্নান বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৭০-৭৫ শতাংশ মানুষ গ্রামে-গঞ্জে বসবাস করে, যারা ঢাকার উচ্চবিত্ত বা উচ্চ-মধ্যবিত্ত পর্যায়ের নয়। যারা সুশীল সমাজ বা উন্নত নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি নয়। তারাই আমাদের দেশের প্রকৃত মালিক। তারাই যুদ্ধ করেছে, এখনো খেতে-খামারে কাজ করে কলকারখানায় আমাদের টিকিয়ে রেখেছে। লুকানোর ব্যাপার নয়, আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলি। তাঁরা চায়, আরও বেশি উন্নয়ন। তাদের যদি বলা হয়, এক গ্লাস গণতন্ত্র খাবে, না এক গ্লাস উন্নয়ন খাবে? তারা এক গ্লাস উন্নয়নই নেবে। কারণ সেটা তার খুব দরকার এই মুহূর্তে।’
তিনি বলেন, ‘খাওয়ার পানি, স্যানিটেশন, প্রাথমিক শিক্ষা, শিশুদের টিকা, নারীদের সচেতন করা, বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া—প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের হাজার বছরের যে অচলায়তন ছিল, সেগুলো আমরা ঠেলে কিছুটা দূরে সরাতে পেরেছি। এখন আমাদের জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য। ক্ষমতার জন্য নয়।’
দেশে উন্নয়নের পাশাপাশি বৈষম্য বেড়েছে তা অস্বীকারের উপায় নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বলে বৈষম্য বেড়েছে। বেড়েছে তা অস্বীকার করি না। বৈষম্য বাড়ার কারণ হলো যাদের কাছে সম্পদ আছে, অর্থ, শিক্ষা, মেধা আছে, সামাজিক যোগাযোগ শক্তিশালী, তারা বেশি অর্জন করছে। যাদের অবস্থান শূন্যের কোঠায়, কিছুই নেই, ভূমিহীন প্রায় সমাজ থেকে বিচ্যুত বলা যায়, যাদের বিশ্বব্যাংকের মাপে দৈনিক আয় এক ডলারের নিচে ছিল, সেই সংখ্যা ওখানে আর নেই। এখন আস্থা নিয়ে বলা যায়, না খেয়ে কেউ নেই।’
ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে জানিয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‘এই সরকারের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্পূর্ণ না হলেও কমিয়ে আনা। আমরা মোটাদাগে দারিদ্র্য ৪০-৪৫ ছিল ২০০৮-২০০৯ সালে সেখানে এখন ১৮ দশমিক ৫-এ আছি। প্রচণ্ড দারিদ্র্য ৪-৫-এর মধ্যে আছে। আমাদের সাহস এসেছে যে আমরা ধারাবাহিক কাজ চালিয়ে গেলে এটাকে নির্মূল করতে পারব।’