১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:৩০:৪৩ পূর্বাহ্ন
দেশ কোন দিকে যাবে তা নির্ধারণ হচ্ছে দিল্লিতে: আনু মুহাম্মদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৯-২০২৩
দেশ কোন দিকে যাবে তা নির্ধারণ হচ্ছে দিল্লিতে: আনু মুহাম্মদ

দেশ কোন নীতির দিকে যাবে—সহিংসতার দিকে যাবে, ভয়ংকর রকমের নিপীড়নের দিকে যাবে না কি বাংলাদেশের মানুষ শ্বাস ফেলার জায়গা পাবে, সেটা নির্ধারণ হচ্ছে দিল্লিতে। এমন মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। 


আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে লেখক, শিল্পী, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের এক সমাবেশে এ মন্তব্য করেন আনু মুহাম্মদ।


আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ আমরা শাহবাগে আছি, আপনারা জানেন—দিল্লীতে অনেকগুলো ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন ৷ নরেন্দ্র মোদি আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সভা করেছেন, শেখ হাসিনা বাইডেন-মোদির সঙ্গে হাস্যমুখে ছবি তুলেছেন। কোন নীতির দিকে যাবে, সহিংসতার দিকে যাবে, ভয়ংকর রকমের নিপীড়নের দিকে যাবে নাকি বাংলাদেশের মানুষ শ্বাস ফেলার জায়গা পাবে, সেটা নির্ধারণ হচ্ছে দিল্লিতে। এটা আরেকটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক অবস্থা।’


আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘দিল্লিতে কেন বাইডেনের সঙ্গে, মোদির সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে। বাংলাদেশের ভাগ্য কেন দিল্লিতে, বেইজিংয়ে, ওয়াশিংটনে কিংবা মস্কোতে নির্ধারণ হবে। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত নির্ধারিত হবে বাংলাদেশর মাটিতে। মত প্রকাশ ও ভোটাধিকারের আন্দোলন কার্যত বাংলাদেশের ভাগ্যকে ওয়াশিংটন কিংবা বেইজিং থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসার আন্দোলন। বাংলাদেশের মানুষ যাতে নিজেদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারেন—সেই শক্তিকে অর্জন করা, সেই শক্তিকে সম্প্রসারিত করার জন্য এ আন্দোলনের সম্প্রসারণ দরকার। এই আন্দোলন (ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার) হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আন্দোলন। ’


বর্তমান সরকার উন্নয়নকে ধর্ম হিসেবে ব্যবহার করছে মন্তব্য করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করে লক্ষ কোটি কোটি টাকা পাচার করা—এটাকে উন্নয়ন বলে মানুষের সামনে হাজির করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে এটি একটি প্রতিষ্ঠিত ধারণার কারণে সম্ভব হচ্ছে। উন্নয়ন মানে মানুষের শিক্ষা, খাদ্য, চিকিৎসা, অধিকার এবং নিরাপত্তা। সবচেয়ে বড় কথা হল দেশের ওপর তার মালিকানা, দেশের ওপর তার কর্তৃত্ব; এটা হল আসলে উন্নয়ন। কিন্তু বর্তমান সরকার উন্নয়নের যে ধর্ম দেখাচ্ছেন, রূপ ও ঝলমলে জিনিস দেখিয়ে নিজের স্বৈরতন্ত্র জায়েজ করতে চাচ্ছেন। 


আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রের যা যা বৈশিষ্ট্য দরকার তা বর্তমান সরকারের রয়েছে। স্বৈরতন্ত্র যখন সম্মতি সমাজ তৈরি করে তখন ফ্যাসিবাদের দিকে যাত্রা করে। সম্মতি সমাজ তৈরি করার ক্ষেত্রে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ভূমিকা হচ্ছে ভয়ংকর। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি ছিল। আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে, এরশাদের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বমূলক ভূমিকা ছিল। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষক এখন স্বৈরতন্ত্রের পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছে। তারা কিছুদিন পরপর স্বৈরতন্ত্রের পক্ষে, লুন্ঠনের পক্ষে, সম্পদ পাচারের পক্ষে বিবৃতি দেয়।’ 


শেয়ার করুন