রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ে ও ধর্ষণের মামলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ জামিন পেয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–৮–এর বিচারক বেগম মাহফুজা পারভীন তাঁর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
আইনজীবীর মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদনের পর তাঁকে জামিন দেওয়া হয় বলে ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী মোখলেছুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান।
এর আগে হাইকোর্ট তাঁকে আগাম জামিন দিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। সেই সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আর বয়স নির্ধারণ করার আগ পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীকে নিরাপদ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া বয়স নির্ধারণ করে ওই প্রতিবেদন বিচারিক আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদনের পর আদালত তাঁকে জামিন দেন। আজ ট্রাইব্যুনালে মুশতাকের সঙ্গে ওই ছাত্রীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গত ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এ কলেজছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়। আর এতে সহযোগী হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকে আসামি করা হয়।
মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, তাঁর মেয়ে মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভিকটিমকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজখবর নেওয়ার নামে আসামি ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কয়েক দিন পর আসামি মুশতাক ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিমকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবেন বলে হুমকি দেন মুশতাক।
এ বিষয়ে বাদী প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি অধ্যক্ষ; বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি ভিকটিমকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছেন এবং যৌন নিপীড়ন করেছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে এ সংক্রান্ত অপহরণ মামলা দায়ের করার পর আলোচিত রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির সেই ছাত্রী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন গত ১৬ জুলাই। ঠাকুরগাঁও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই ছাত্রী জানান তাঁকে কেউ অপহরণ করেননি বা ধর্ষণ করেননি। ওই দিন আদালত থেকে নিজ জিম্মায় মুক্তি নিয়ে তিনি মুশতাকের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন।
তারও আগে গত ৪ জুলাই মুশতাক হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন। সেখানেও ওই ছাত্রী জানান তাঁরা বিয়ে করেছেন।