মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ (এমটিএফই) গ্রুপ ইনকরপোরেটেডে অনলাইন প্রতারণার বিষয়ে তথ্য চেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এমটিএফই নামের একটি মুঠোফোন অ্যাপে বিনিয়োগ করে চলতি বছরে বাংলাদেশের বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। রীতিমতো প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এমটিএফই। এমন প্রেক্ষাপটে শুক্রবার সিআইডি গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এমটিএফইর প্রতারণার বিষয়ে তথ্য চেয়েছে।
বাংলাদেশে এমটিএফইর কোনো কার্যালয় নেই, নেই কোম্পানির কোনো চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) নাম–ঠিকানা। মুঠোফোনেই সব কাজ হতো। বিনিয়োগকারী সংগ্রহ করতে এমটিএফই প্রতিনিধি নিয়োগ করত। দেশের বিভিন্ন জেলায় এ রকম শত শত প্রতিনিধি বানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সিআইডি জানায়, বাংলাদেশে কোনো কার্যালয় না থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারিতে এমটিএফই কার্যক্রম শুরু হয়। ঘরে বসে সহজে আয়ের পথ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ব্যাপক প্রচারণা চালায়। বিভিন্ন ভিডিও ও বিজ্ঞাপন দেখে ভুক্তভোগীরা আগ্রহী হন।
সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হন একজন আরেকজনকে দেখে। এমটিএফইও বহুস্তর বিপণন বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে কাজ করেছে। বেশি লাভের আশায় লাখ লাখ মানুষ অ্যাপটিতে বিনিয়োগ করেছেন। কিছু মানুষ অবশ্য লাভের অংশ পেয়েছেন। তবে চূড়ান্ত বিচারে বিনিয়োগের সব অর্থই খোয়াতে হয় গ্রাহকদের। ঢাকাসহ বরিশাল, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহী, কুমিল্লা ও সাতক্ষীরায় প্রতারণা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সারা দেশে চার থেকে পাঁচ লাখ গ্রাহক এমটিএফইর মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা খুইয়েছেন।
নাইজেরিয়ায় শতকোটি ডলার, শ্রীলঙ্কায় শতকোটি রুপি আত্মসাৎ, সেই এমটিএফই বাংলাদেশে
সিআইডি আরও বলছে, শুধু এমটিএফই নয়, দেশে এখনো সক্রিয় আছে অনিবন্ধনকৃত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনভিত্তিক এ ধরনের প্রতারক চক্র। বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এমএলএম ব্যবসা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ ও নিষিদ্ধ। অ্যাপ ও অনলাইনভিত্তিক যেকোনো ব্যবসায় বিনিয়োগকারীদের এ বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার। সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম বিষয়টি নজরদারি করছে। এ জন্য ভুক্তভোগী গ্রাহক ও প্রতারক চক্রের তথ্য এবং অভিযোগ জানাতে সিআইডি সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।