চীনের আবাসন খাতে এত বেশি খালি ভবন রয়েছে যে, সেগুলো দেশটির বিদ্যমান জনসংখ্যা কোনোভাবেই পূরণ করতে পারবে না। বিদ্যমান খালি ভবনগুলো পূরণ করতে কম-বেশি প্রায় ৩০০ কোটি জনসংখ্যা প্রয়োজন। চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক সাবেক কর্মকর্তা এ মন্তব্য করেছেন। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চীনের আবাসন খাতে একপ্রকার বিস্ফোরণই ঘটেছে। বিগত শতকের ৯০-এর দশক থেকে শুরু করে কোভিড-১৯ মহামারির আগ পর্যন্ত দেশটির আবাসন খাতে কয়েক শ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদার বিপরীতে জোগান বেশি হওয়ায় খাতটি বর্তমানে বেশ সংকটের মধ্যে রয়েছে।
চীনের আবাসন খাত ২০২১ সালের আগ পর্যন্তও দেশটির প্রবৃদ্ধির অন্যতম পিলার ছিল। কিন্তু সে বছর আবাসন খাতের অন্যতম বৃহৎ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এভারগ্র্যান্ডে গ্রুপ সংকটের কারণে নিজেদের দেউলিয়া বলে ঘোষণা করলে সংকট সামনে আসে। তবে এ বিষয়ে সরকার কোনো মন্তব্য করেনি এখনো। এই প্রথম কোনো সাবেক কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর দেওয়া তথ্য বলছে, সারা দেশে আবাসন খাতে প্রায় ৬৫ কোটি (৬৪ দশমিক ৮ কোটি) বর্গমিটার খালি ভবন পড়ে রয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হিসাব বলছে, সব মিলিয়ে ৭২ লাখ খালি ভবন রয়েছে চীনজুড়ে। এসব ভবনের প্রতিটি বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের আয়তন গড়ে ৯৭০ বর্গফুট হিসেবে অনুমান করা হয়েছে।
এই হিসাবে সেসব আবাসিক ভবনকে ধরা হয়নি, যেগুলো এরই মধ্যে ক্রেতারা অগ্রিম টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন, কিন্তু নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক সংকটের কারণে নির্মাণ করতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, ২০১৬ সালের শেষ দিক থেকে পরবর্তী কয়েক বছর মধ্যস্বত্বভোগী ফটকাবাজেরা বিপুল পরিমাণ বাড়ি কিনে নেওয়া এই আবাসন সংকট তৈরির অন্যতম কারণ।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাবেক উপপ্রধান হে কেং (৮১) বলেছেন, ‘কী পরিমাণ খালি বাড়ি পড়ে রয়েছে, আপনি অনুমান করতে পারেন? প্রত্যেক বিশেষজ্ঞই আলাদা আলাদা সংখ্যা বলছেন। তবে অধিকাংশই বিশ্বাস করেন যে, দেশে বর্তমানে খালি বাড়ির যে সংখ্যা রয়েছে, তা পূরণ করতে অন্তত ৩০০ কোটি লোক প্রয়োজন।’
হে কেং আরও বলেন, ‘এই অনুমান হয়তো খানিকটা বেশি। তবে এটি নিশ্চিত যে, দেশের ১৪০ কোটির বেশি মানুষ এই খালি ভবনগুলো কোনোভাবেই পূরণ করতে পারবে না।’ চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম চায়না নিউজ সার্ভিসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ডংগুয়ানে এক ফোরামে হে কেং এ কথা বলেন।