১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৭:২৮:১৯ অপরাহ্ন
জাবালিয়া ক্যাম্পে পাঁচ দিন ধরে নেই খাবার ও পানি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-১২-২০২৩
জাবালিয়া ক্যাম্পে পাঁচ দিন ধরে নেই খাবার ও পানি

গাজায় ইসরায়েলি হামলা এখনো অব্যাহত। গতকাল শনিবার ভোরেও গাজার বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এদিন গাজা উপত্যকার কেন্দ্রস্থল ও দক্ষিণের শহর রাফায় বোমা হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। আর হামাস-চালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, উত্তর গাজায় নিহতের সংখ্যা তারা গুনতে পারছে না। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা জাবালিয়া আশ্রয়শিবিরে। সেখানে পাঁচ দিন ধরে খাবার ও পানির সংকটে ভুগছে বাসিন্দারা। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও আল জাজিরার।


আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন বলছে, পূর্ব ও উত্তর দিক থেকে ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো খান ইউনিস শহর ঘিরে রেখেছে। ট্যাংকগুলো শহরের অন্যতম বড় ও ব্যস্ত সড়ক জালাল স্ট্রিটের দিকে এগোচ্ছে। ফলে গত ১৩ অক্টোবর খান ইউনিসে আসা বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোকে আবার ছাড়তে হচ্ছে শহরটি।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেসামরিক লোকজনকে ইসরায়েলি বাহিনী এক স্থান থেকে অন্য স্থানে না যেতে সতর্ক করেছে। তারা ইসরায়েলের এ প্রক্রিয়া ও উদ্দেশ্য ঠিক বুঝতে পারছেন না, আসলে তাদের কোথায় যেতে হবে, সেটিও বুঝতে পারছেন না।


তবে উত্তর গাজার জাবালিয়া আশ্রয়শিবিরের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। গত পাঁচ দিনে সব দিক থেকে ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো ওই এলাকা ঘিরে রেখেছে। ফলে আশ্রয়শিবিরের ভেতরে আটকা পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। তাদের কাছে খাবার নেই, পানি নেই।


বিবিসির প্রতিবেদককে গতকাল সকালে সেখানকার এক বাসিন্দা বার্তা পাঠিয়েছে যে,  পাঁচ দিন ধরে তাঁরা খাবার ও পানি ছাড়া রয়েছেন। 

একই ধরনের কয়েক ডজন বার্তা পৌঁছেছে, কিছু স্থানীয় রেডিও স্টেশনেও।


পরিস্থিতির ভয়াবহতা বোঝাতে ইসমাইল বদর নামে এক অ্যাক্টিভিস্ট ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছেন যে, ‘এখন সময় (গতকাল শনিবার) সকাল ৮টা। জাবালিয়া আশ্রয়শিবিরে এখনো ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বোমাবর্ষণ চলছে’।


এদিকে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দেওয়া সর্বশেষ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা জানিয়েছেন, এদিন সাড়ে তিন শর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়। আহত হয়েছে আরও ৫৫৮ জন।


এর আগে আশরাফ আল-কুদরা জানিয়েছিলেন, নিহতদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই শিশু ও নারী। পাশাপাশি তিনি জানান, ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানির পাশাপাশি গাজায় ব্যাপক অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রাণ হারিয়েছেন চিকিৎসাকর্মীরাও। আশরাফ আল-কুদরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ২৯০ জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন।


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও জানান, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০২টি অ্যাম্বুলেন্স বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এর বাইরে ইসরায়েলি হামলায় ১৬০টি চিকিৎসাকেন্দ্র বিধ্বস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২০টি হাসপাতাল ও ৪৬টি প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।


দুই মাসের বেশি সময় আগে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে তারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১৭ হাজার ৪৮৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আর ইসরায়েলের হিসাব অনুসারে, হামাসের হামলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৪৭ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।


শেয়ার করুন