১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:২৩:১৯ অপরাহ্ন
নির্বাচন করতে পারছেন না সাদিক-শাম্মী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০১-২০২৪
নির্বাচন করতে পারছেন না সাদিক-শাম্মী

বরিশাল-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন। ফলে শাম্মী আহমেদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়তে পারছেন না।


এদিকে বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতার বিষয়ে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন একই বেঞ্চ। ফলে সাদিক আবদুল্লাহও নির্বাচন করতে পারছেন না।


দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও হাইকোর্টে প্রার্থিতা ফিরে পেতে বিফল হয়েছিলেন শাম্মী আহমেদ। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে গিয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর ‘নো অর্ডার’ পান শাম্মী আহমেদ। এ অবস্থায় প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াসহ প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশনা চেয়ে তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেছিলেন। আবেদনটি মঙ্গলবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখানেও শাম্মী আহমেদ বিফল হলেন।


যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে বরিশাল-৫ আসনে সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ-সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। অন্যদিকে জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে সাদিক আবদুল্লাহও ইসিতে আপিল করেন। শুনানি শেষে ১৫ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন জাহিদ ফারুকের আপিল মঞ্জুর করে। সাদিক আবদুল্লাহর আপিল নামঞ্জুর করে।


নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিজের প্রার্থিতা ফিরে পেতে এবং জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে সাদিক আবদুল্লাহ হাইকোর্টে দুটি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে দেওয়া ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। একই সঙ্গে সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তাকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দেন।


সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন জাহিদ ফারুক। এর ওপর ১৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে সেদিন আদালত সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তাকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। এতে সাদিক আবদুল্লাহর ভোটের লড়াই আটকে যায়। এ অবস্থায় ১৯ ডিসেম্বর চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে সাদিক আবদুল্লাহ আবেদন করেন। এদিকে সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনও আবেদন করে। দুটি আবেদনই মঙ্গলবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে একসঙ্গে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়। সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতার ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে বলে মঙ্গলবার আদেশ দিলেন আপিল বিভাগ।


শামীমের প্রার্থিতার বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি পিছিয়েছে : ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকের প্রার্থিতার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের করা আবেদনের শুনানি পিছিয়েছে। আজাদের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মঙ্গলবার ‘নট দিজ উইক’ (চলতি সপ্তাহে নয়) বলে সিদ্ধান্ত দেন। ফলে আগামী সপ্তাহে ওই আবেদনের ওপর শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন এ কে আজাদের আইনজীবী তানজিব উল আলম।


আলমের প্রার্থিতার বিরুদ্ধে সিমিনের আবেদন খারিজ : গাজীপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলম আহমেদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমির করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে আলমের প্রার্থিতা বহাল রইল বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী।


এদিকে সিলেট-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান, খুলনা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন, ময়মনসিংহ-১১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ ও যশোর-৪ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হক বাবুলের প্রার্থিতা বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এছাড়া নোয়াখালী-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার রুহুল আমিনের প্রার্থিতা বাতিল করতে নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আর তথ্য গোপন করে আদেশ নেওয়ায় ঢাকা-৭ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ হাসিবুর রহমান মানিকের প্রার্থিতাও বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ।


আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন নৌকার প্রার্থী : রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে দলের নেতাকর্মী ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে অবশেষে আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারা। সোমবার বিকালে দারা ওই আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ লুনা ফেরদৌসের আদালতে হাজির হয়ে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দারার প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ। তিনি জানিয়েছেন, আদালত দারার বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তবে আগামীতে যাতে কোনোভাবেই আচরণবিধি ভঙ্গ না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।


ইন্দুরকানীতে ৫ নির্বাচন কর্মকর্তাকে শোকজ : ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি জানান, পিরোজপুর-১ আসনের ইন্দুরকানীতে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল মার্কার প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন-এমন বিষয় সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে ৫ কর্মকর্তাকে শোকজ করেছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুবক্কর সিদ্দিকী। অভিযুক্ত কর্মকর্তারা হলেন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার পত্তাশী জনকল্যাণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিকাশ চন্দ হালদার, বাড়ৈখালী এস জিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির হাওলাদার, পাড়েরহাট আরএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিব শংকর, কলারণ চন্ডিপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সন্তোষ কুমার শিল ও একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুবাল চন্দ্র শীল। তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন পরিচালনার বিষয় জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


শেয়ার করুন