১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৮:৩৩:১৪ পূর্বাহ্ন
রপ্তানি পণ্য চুরি রোধ করবে সিসি ক্যামেরা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০২-২০২৪
রপ্তানি পণ্য চুরি রোধ করবে সিসি ক্যামেরা

 দেশের লাইফ লাইনখ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) বসানো হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন সড়কে দুর্ঘটনা কমবে, তেমনি চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার পথে কাভার্ডভ্যান থেকে রপ্তানি পণ্য চুরির ঘটনাও কমবে। মহাসড়কের ২৬৫ কিলোমিটারের মধ্যে চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি রোধের পাশাপাশি যানবাহনের বেপরোয়া গতি ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করা হবে।


প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসাবে পরিচিত ‘হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কের ৪৯০টি স্থানে এক হাজার ৪২৭টি বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী মার্চে প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে। এদিকে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ায় খুশি চট্টগ্রামের পোশাক কারখানার মালিকসহ আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।


প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ও হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানি পণ্য নেওয়ার পথে গড়ে প্রতি মাসে ৩৫টির বেশি চুরির ঘটনা ঘটছে। এ কারণে ২০২১ সালের জুনে ‘হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়। ক্যামেরার মাধ্যমে সন্দেহজনক অনুপ্রবেশ, যানবাহনের নম্বর প্লেট, গতিপথ, হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালক, থ্রি হুইলার, দ্রুততম গাড়ি শনাক্ত করাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শনাক্ত করা যাবে। প্রকল্পটির ব্যয় ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। প্রকল্পের উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে রয়েছে-বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল), বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও স্মার্ট টেকনোলজিসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের জুনে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ঢাকার সাইনবোর্ড থেকে চট্টগ্রামের সিটিগেট এলাকা পর্যন্ত দুটি অঞ্চলে বিভক্ত হাইওয়ে পুলিশ। দাউদকান্দি থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত গাজীপুর অঞ্চল এবং বাকি অংশ কুমিল্লা অঞ্চল। ক্যামেরা থেকে ডেটা সংরক্ষণের জন্য মেঘনাঘাট এলাকায় একটি দ্বিতল ডেটা সেন্টার এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া গাজীপুর অঞ্চলে একটি মনিটরিং সেন্টার হবে। কুমিল্লা অঞ্চলে চারটি মনিটরিং সেন্টার হবে।


চট্টগ্রামে পোশাক কারখানার মালিক জালাল আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাভার্ডভ্যান পাঠালেই টেনশনে থাকতে হয়। কখন কোন ঘটনা ঘটে। এ মহাসড়কে প্রায় ছিনতাই ও নাশকতার মতো ঘটনা ঘটে। সিসি ক্যামেরা লাগানোর কারণে অপরাধ কমবে বলে প্রত্যাশা করছি। সিসি ক্যামেরা থাকলে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানও সহজ হবে। এছাড়া চালকরাও সতর্ক হয়ে গাড়ি চালাবে বলে মনে হয়। এতে করে যাত্রী ও চালকদের জানমালের নিরাপত্তা যেমন বাড়বে, তেমন হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতাও বাড়বে। খুবই ভালো উদ্যোগ এটি। এতে আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা উপকৃত হবেন।


প্রকল্পের পরিচালক হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক বরকত উল্লাহ খান যুগান্তরকে জানান, প্রকল্পটির প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী মাসে প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে। সিসি প্রকল্পের আওতায় অত্যাধুনিক লং ভিশন ক্যামেরা, পিটিজেড ডোম ক্যামেরা, চেকপয়েন্ট ক্যামেরা ও বুলেট ক্যামেরা রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সার্বিক নিরাপত্তা বাড়বে।


শেয়ার করুন