১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৩:৪৬:২২ অপরাহ্ন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে স্থান পাবেন না ঋণখেলাপিরা
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৩-২০২৪
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে স্থান পাবেন না ঋণখেলাপিরা

ইচ্ছাকৃত ঋণখেলা‌পিদের বিষয়ে আরও কঠোর হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাঁরা যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সদস্য হতে না পারেন এবং রাষ্ট্রীয় পদক বা সম্মাননা ও ভিআইপি সুবিধা না পান, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে নতুন একটি নীতিমালা প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন চলছে কার্যবিধি প্রণয়নের কাজ। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি অর্থবছরের শেষের দিকে এই নীতিমালার প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে।


 


বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উচ্চ ঋণখেলাপি একটি জাতীয় সমস্যা। এর নেপথ্যে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া ছাড়া উপায় নেই। এ নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। কার্যবিধি প্রস্তুত হলে তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে। তারপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ইচ্ছাকৃত খেলাপি চিহ্নিত করবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। আর ব্যাংকগুলোকে সার্বিক সহযোগিতা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।  


 


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। যদিও ২০০৯ সালে দেশে মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা।


 


তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের তথ্য আন্তর্জাতিক মানের নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এখানে অনেক তথ্য গোপন করা হয়। খেলাপি কম দেখাতে ঋণ পুনঃ তফসিল, পুনর্গঠন ও ঋণ অবলোপন করার তথ্য দেওয়া হয় না। পাশাপাশি বিশেষ ছাড় দিয়ে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হয়। আদালতে আটকা মামলার তথ্য খেলাপিতে দেখানো হয় না। এসব বিষয়ে ছাড় দিলে একটা পর্যায়ে ব্যাংক খাতে ধস নামবে।’খেলা


পি ঋণ আদায়ে এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই ধারাবাহিকতায় ১১ দফা রোডম্যাপও ঘোষণা ক‌রা হয়েছে। এখন কো‌নো গ্রাহক ঋণ নি‌য়মিত প‌রি‌শোধ না কর‌লে তাঁকে ইচ্ছাকৃত খেলা‌পি হিসেবে চি‌হ্নিত করা হ‌বে।  


বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের এক অনুষ্ঠানে জানান,  খেলা‌পিদের ‌বিভি‌ন্ন সু‌বিধা থে‌কে ব‌ঞ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়মে খেলাপিরা জ‌মি, বা‌ড়ি ও গা‌ড়ি কিন‌তে পারবেন না। একই সঙ্গে নতুন ব্যবসা কিংবা কোম্পানি খুল‌তেও সুযোগ পাবেন না তাঁরা।


বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির বিষয়টি হঠাৎ করে সৃষ্ট কোনো সমস্যা নয়, দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা সমস্যার ধারাবাহিকতা মাত্র। কয়েক বছর ধরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এর মূলে রয়েছে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ। এ ধরনের গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য রয়েছে। কিন্তু ইচ্ছা করে ঋণ শোধ করছেন না। তাঁদের কোমরের জোর অনেক বেশি। এটা উচ্চপর্যায় থেকে না করলে কিছু হবে না। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মোক্ষম সময় চলছে।


শেয়ার করুন