১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৭:২৭:০৪ অপরাহ্ন
দেশের আর্থিক খাতে চরম ঝুঁকি দেখছে বিএনপি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৫-২০২৪
দেশের আর্থিক খাতে চরম ঝুঁকি দেখছে বিএনপি

দেশের আর্থিক খাতে চরম ঝুঁকি দেখছে বিএনপি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অব্যাহত গতিতে হ্রাস পাওয়া, ডলার সংকট আরও তীব্র হওয়া এবং জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে- এমনটা মনে করছে দলটির স্থায়ী কমিটি। এ অবস্থায় দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণ জনগণের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।


দেশের আর্থিক খাতের পরিস্থিতি নিয়ে গত সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।


বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পাঁচ ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘রিজার্ভ চুরি’ নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। নেতাদের ভাষ্য, এটা নিয়ে জনমনে হতাশা ও উদ্বেগ আছে। এতে সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণ করে। 


বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিষয়ে কোনো পরিষ্কার তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারের দিক থেকে কখনো বলা হচ্ছে, ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলার। আবার কখনো ১৮ বিলিয়ন ডলার বলা হচ্ছে। বিএনপি নেতারা মনে করেন, নতুন করে ‘রিজার্ভ চুরির’ ও হিসাবের গরমিলের কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে বিএনপির একটি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। খুব শিগগির দলের পক্ষ থেকে বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরবে দলটি।


দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে স্থায়ী কমিটির নেতারা বৈঠকে বলেন, দেশে বর্তমানে ব্যাপক ডলার সংকট চলছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে পর্যাপ্ত ডলার নেই। তাদের বাধ্য হয়ে খোলা বাজার থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে। এতে করে আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। এর ফলে মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে। সামনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে। এতে প্রমাণিত হয়, অর্থনীতিতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।


বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) চলতি মাসে বাংলাদেশের খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দরিদ্র মানুষের খাবারের ব্যয় ৫৮ শতাংশ বেড়েছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, খানা জরিপ অনুযায়ী ২০২২ সালে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের খাবার কেনার খরচ ছিল প্রতি মাসে মাথাপিছু ১ হাজার ৮৫১ টাকা। গত দুই বছরে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাথাপিছু খাবার কেনার খরচ বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৯২৩ টাকা; যা দুই বছর আগের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।


স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডব্লিউএফপির এ প্রতিবেদন ও করণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিএনপির মূল্যায়ন হচ্ছে, খাবারের এ ব্যয় বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। তারা এখন কী করবে, কিছু ভেবে পাচ্ছে না। অথচ খাদ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই।


ফারাক্কা বাঁধের নেতিবাচক প্রভাব, পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে সেমিনার করবে বিএনপি। এ নিয়েও স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। বিএনপির অভিমত, এটি বাস্তবায়নে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা রয়েছে। এটি সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই নেতা বলেন, পরিবেশ ও জলবায়ু ইস্যুতে সারাবিশ্ব সোচ্চার রয়েছে। ফারাক্কা বাঁধের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে বিএনপির ও সোচ্চার হতে হবে। তাহলে আন্তর্জাতিক সমর্থনও পাবেন। ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও লবণাক্তা দেখা দিয়েছে, যা পরিবেশের জন্য বড় শঙ্কা।


শেয়ার করুন