করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন পরিকল্পনার অংশ হিসাবে সব ধরনের যানবাহন ক্রয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রোববার অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ-১ থেকে উপসচিব মোহাম্মদ আনিসুজ্জামানের সই করা এক পরিপত্রে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে- নতুন/প্রতিস্থাপক হিসেবে সব ধরনের যানবাহন ক্রয় (মোটরযান, জলযান, আকাশযান) বন্ধ থাকবে। শুধু জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্র বিবেচনায় আপ্যায়ন ব্যয়, ভ্রমণ ব্যয়, অন্যান্য মনিহারি, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ও আসবাবপত্র খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে।
এর আগে সরকারি-বেসরকারি সব খাতে ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য নির্বাহী আদেশে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতকেও এসব মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনামন্ত্রীর ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় গত মে মাসে সরকারপ্রধান এসব নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ বছরে সবচেয়ে চাপে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি। করোনা সংকট পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠার আগের চতুর্থমুখী চাপ শুরু হয়। রাজস্ব আয়ে ঘাটতির পাশাপাশি নতুন করে যোগ হয়েছে বিশ্ব সংকট।
বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল এবং নিত্যপণের দাম বৃদ্ধি পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। ফলে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, রপ্তানি এবং প্রবাসী আয়ে ঘাটতির কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে অসহনীয় হয়ে উঠছে জিনিসপত্রের দাম।
খোলাবাজারে প্রথমবারের মতো ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে মার্কিন ডলার। মনে হচ্ছে আগামীতে পরিস্থিতি আরও বেসামাল হয়ে উঠবে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি সব খাতে ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা