নৌপরিবহণ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, অন্তত এই সরকারের সময়ে সাবধানে চলেন। সিন্ডিকেট করার চেষ্টা করবেন না। আমাকে অনিয়মের সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করবেন না। কেউ চেষ্টা করলে তার ক্যারিয়ার শেষ করে দিব। টেন্ডার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, টেন্ডারে এমন কোনো শর্ত দিবেন না যাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার পথ বন্ধ হয়।
বুধবার বিকালে রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউতে বিআইডব্লিউটিসির প্রধান কার্যালয় ফেয়ারলী হাউজে পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন সকালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চের (নিটার) শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
কারসাজি ও অনিয়ম বন্ধ করে স্বচ্ছতার সঙ্গে টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালনা করতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন নৌপরিবহণ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। একইসঙ্গে তিনি সেবার মান ও আয় বাড়াতে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিসিকে আয় বাড়াতে হবে। এ সংস্থার আয় না হলে করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হবে না। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের অন্তত ৭৫ শতাংশ চাটুকার। দক্ষতা দিয়ে পদোন্নতি হয় না। আমরা জানি, সিভিল সার্ভিসে যারা কর্মরত তাদের দলবাজ হতে হয় না। কিন্তু এখন দেখছি সব সেক্টরে চাটুকারিতা চলছে। বর্তমান সরকারের এই আমলে অন্তত ব্যয় কমান, আয় বাড়ান। আপনাদের প্রত্যেকটি প্রাক্কলনে আমার সন্দেহ আছে। এখানে অনেক সমস্যা আছে জানি। আমি এখনও লঞ্চে যাতায়াত করি। নৌপথের সমস্যা আমি জানি। বিআইডব্লিউটিসির নৌযানের সমস্যা সমাধান করার নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ঘাটে কম-বেশি টাকা আদায়ের অভিযোগ শুনি। আমি যেকোনো সময় ঘাটে যাব, মানুষের সঙ্গে কথা বলব। আমি যখন দায়িত্বে থাকব না তখন ব্যাগ নিয়ে বাজারে যেতে হবে। আমাকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকতে হবে। আমি সাধারণ মানুষের জন্যই কাজ করব।
সভায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নৃশংসভাবে মানুষ হত্যার বিষয়ে আলোচনা করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আন্দোলনে ছাত্রদের যেভাবে মারা হয়েছে, তা মনে পড়লে আমি এখনও ঘুমাতে পারি না। তারা জীবন দিয়ে যে স্বাধীনতা এনেছেন, তা আমাদের মনে রাখতে হবে।
সাখাওয়াত বলেন, সম্প্রতি একটি ভিডিও বের হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে মানুষ মেরে একজনের ওপর আরেকজনের লাশ ছুড়ে ফেলা হচ্ছে। কত নৃশংসতা চিন্তা করা যায়। যেই সরকার এইসব কাজ করেছে, তারা কত দুর্নীতি করেছে তা বলার মতো নয়। সরকারের নিচ থেকে উচ্চপর্যায় পর্যন্ত দুর্নীতি হয়েছে। ওই সরকারের সময়ে যারা সৎ ছিলেন তাদেরকে ভালো জায়গায় রাখা হয়নি। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, তার প্রধানমন্ত্রী ৪০০ কোটি টাকার মালিক, হেলিকপ্টারে চলাচল করে, সেই দেশে সিস্টেম নষ্ট হবারই কথা।