১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৩:৩৪:৩০ অপরাহ্ন
ভালো সম্পর্ক ছাড়া বাংলাদেশ-ভারতের গত্যন্তর নেই: ডয়চে ভেলেকে ড. ইউনূস
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৯-২০২৪
ভালো সম্পর্ক ছাড়া বাংলাদেশ-ভারতের গত্যন্তর নেই: ডয়চে ভেলেকে ড. ইউনূস

‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী এবং আমাদের একমাত্র প্রতিবেশী বলা যায়। কারণ, চারদিক থেকেই ভারত আমাদের আছে। কাজেই তার সাথে আমাদের সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক হওয়া উচিত এবং হবে। এ ছাড়া আমদের গত্যন্তর নাই, তাদেরও গত্যন্তর নাই। দুই দেশের মধ্যে বৈরি সম্পর্ক রেখে কেউ লাভবান হবে না। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা হবে সবচেয়ে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। বন্ধুত্বের শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া- এটাই আমাদের উদ্যোগ।’ সম্প্রতি জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা বলেন।


সাক্ষাৎকারে সরকারের প্রথম মাসে নেওয়া নানা উদ্যোগ ও আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন ড. ইউনূস।



ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী এবং দুটো দেশ নানাভাবে একে অপরের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ‘ভারতের শক্তিশালী মিত্র’ হিসেবে পরিচিত শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে এক ধরনের টানাপোড়েন দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনি কোন বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নিচ্ছেন? - এ প্রশ্নে ড. ইউনূস ভালো সম্পর্ক ছাড়া বাংলাদেশ-ভারতের গত্যন্তর নেই বলে জানান।


তিনি আরও বলেন, পানিবন্টন চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক আইন আছে। দুই দেশের মধ্যকার চলমান বিরোধ নিরসনে দুই দেশ আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিলেই সেটার সমাধান হবে। সার্ক একটা পরিবারের মতো ছিল। আমরা সেই কাঠামোতে ফিরে যেতে পারি কিনা দেখবো। শুধু ভারতের সাথে না, দক্ষিণ এশিয়ায় যত দেশ আছে সবাই যেন পরস্পরের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজার রাখে। শান্তিপূর্ণ জোন হিসেবে আমরা একে গড়তে চাই। বাধা-বিপত্তি এড়িয়ে সার্ক ও বিমসটেক-কে সক্রিয় করার করার চেষ্টা করবো।


‘আপনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর একমাস পূর্ণ হলো। গত কয়েক সপ্তাহে কোন কোন বিষয়কে আপনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন?’ - এ প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমার তো অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা না। অগ্রাধিকারগুলো সামনে এসে গেছে। আমি বাছাই করার সুযোগও পাইনি। শান্তি-শৃঙ্খলা হলো সবার প্রথমে। যেহেতু বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা আসছি, সরকার গঠন করেছি, কাজেই প্রথম দায়িত্ব হলো শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। এটার উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। এরকম বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে হয়নি। ছাত্রদের সঙ্গে সাধারণ জনগণ এগিয়ে এসেছে। এমন কোনো লোক ছিল না যে এটাতে শরিক মনে করেনি। জনমত নির্বিশেষে এই আন্দোলনে শরিক হয়েছে। আমরা একটা বিরাট দায়িত্ব নিয়ে আসছি। এদিকে হলো বিপ্লব আর এদিকে স্বপ্ন। শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়বো। মানুষের সীমাহীন আকাঙ্ক্ষা। আমাদের দায়িত্ব অনেক। অর্থনীতি একটা বিশৃঙ্খল, ভঙ্গুর অর্থনীতি হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে মানুষ এত বিক্ষুব্ধ। সব কিছু লুটপাট। এটা লুটের একটা সরকার ছিল। কাজেই সেই লুটের সরকার থেকে সত্যিকার সরকার, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা- এটাও মানুষের একটা আকাঙ্ক্ষা। এবং এটা দ্রুত দেখতে চায়। সেগুলো আমাদের করার চেষ্টা। এক মাসের মধ্যে আমাদের যতটুকু সম্ভব করেছি।


শেয়ার করুন