২২ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ০৫:৩০:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিক্ষকের বর্ণনায় উঠে এলো বিমান দুর্ঘটনার ভয়াবহ সেই মুহূর্ত
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৭-২০২৫
শিক্ষকের বর্ণনায় উঠে এলো বিমান দুর্ঘটনার ভয়াবহ সেই মুহূর্ত

বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর কী ঘটেছে জানালেন এক আহত শিক্ষক। যার মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে।  তিনি বলেন, ‘আমার হাত পুড়ে গেছে, মুখ ও কানও ঝলসে গেছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।


ঘটনা এতটাই আকস্মিক ছিল যে কারোরই কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানোর সুযোগ ছিল না।’

ওই শিক্ষক বলেন, ‘এটা ঠিক স্কুল ছুটির সময় ছিল। শিক্ষার্থীরা গেটে অপেক্ষা করছিল। কী ঘটছে, তা বোঝার আগেই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।


মুহূর্তেই দৃষ্টিসীমা কমে আসে। আমি শুধু আগুন দেখতে পাচ্ছিলাম, তারপর ধোঁয়া...। আমার হাত পুড়ে গেছে, মুখ ও কান ঝলসে গেছে। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল।

শিক্ষক দ্রুত ওয়াশরুমে গিয়ে একটি ভেজা কাপড় নিয়ে এসে নিজের নাক ঢাকেন। তিনি বলেন, ‘কাছে থাকা বাচ্চাদেরও আমি একই কাজ করতে বললাম। তাদের অনেকের শার্টে ততক্ষণে আগুন ধরে গিয়েছিল। আমি তাদের নিচু হয়ে থাকতে এবং মুখ ঢাকতে বললাম।’


এই শিক্ষকের সঙ্গে তিনজন শিক্ষার্থী সেখান থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়।


তাদের মধ্যে গুরুতর দগ্ধ একজনকে সিএমএইচের বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়।

আহত ওই শিক্ষক বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর শরীরের কিছু অংশে চামড়া উঠে গেছে। আমি আমার পরা কাপড় দিয়ে তাকে মুড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। আমি নিজেও যন্ত্রণায় কাতর ছিলাম। কিন্তু আমি নিজেকে স্থির রেখে অন্যদের শান্ত রাখার চেষ্টা করলাম।’


বিমান আছড়ে পড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান ওই শিক্ষক। কথা বলার সময় ওই শিক্ষকের কণ্ঠ কাঁপছিল। 


আজ সোমবার দুপুর ১টার পর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে গিয়ে পড়ে বিমান এবং বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিমান ও স্কুল ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। যে ভবনে এটি বিধ্বস্ত হয় সেখানে বহু স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিল বলে জানা গেছে। যাদের বেশিরভাগই হতাহত হয়েছে।


দুর্ঘটনার পরপর উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। উত্তরাসহ আশপাশের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধার করা শুরু করে। পরে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী। বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী—এ ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছে।


শেয়ার করুন