হারলেই কিংবা অন্য কোনো ফলাফলেই বিশ্বকাপের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে শ্রীলংকার। জিতলে সুপার টুয়েলভ।
এমন সমীকরণে অস্ট্রেলিয়ায় কার্দিয়ানের মাঠে জ্বলে উঠলেন লংকান স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
তার দুর্দান্ত ঘূর্ণিতে ৯ উইকেটে ১৪০ রানে থেমে গেছেন ডাচ ব্যাটাররা।
এর আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬২ রান তুলতে সক্ষম হয় নেদারল্যান্ডস।
ফলে নেদারল্যান্ডসকে ১৬ রানে হারিয় বিশ্বকাপের আশা টিকিয়ে রাখল শ্রীলংকা। সুপার টুয়েলভে উঠল এশিয়া চ্যাম্পিয়নরা।
৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন হাসারাঙ্গা।
জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ৩৯ রানের প্রয়োজন পড়ে নেদারল্যান্ডসের । কিন্তু হাতে একটি মাত্র উইকেট।
এমন উত্তেজনাময় পরিস্থিতিতে ১৯তম ওভারে একটি নো দুটি ওয়াইড দেন লংকান স্পিনার থিকসানা। নো বলে ছক্কা হাঁকান ডাচ ওপেনার ম্যাক্স ও'ডাউন। ওই ওভারের তৃতীয় বলে আরেকটি ছক্কা হাঁকিয়ে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেন এ ব্যাটার।
ওই ওভার থেকে আসে ১৬ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে তথা ৬ বলে ২৩ রান। একমাত্র ভরসা ও'ডাউন।
বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে না পড়ার আশায় পেসার লাহিরু কুমারার হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। প্রথম তিন বলে মাত্র ২ রান দেন কুমরিা। তাতেই শ্রীলংকার জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। ৪র্থ বলে ও'ডাউন বাউন্ডারি হাঁকালেও তা ছিল কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর।
বাকি দুই বলে কোনো রান না নিলে ৯ উইকেটে ১৪০ রানে থামে নেদারল্যান্ডস।
দলকে সুপার টুয়েলভে না তুলতে পারলেও ডাচদের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন ওপেনার ম্যাক্স ও'ডাউন।
ওপেনিংয়ে নেমে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছেন। খেলেছেন ৬ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৫৩ বলে ৭১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।
তিনি ছাড়া দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন আরও তিন ব্যাটার। ১০ বলে ১৪ রান করে কুমারার বলে আউট হন অলরাউন্ডার বাস ডি লিডা। থিকসানার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১৯ বলে ১৬ করেন টম কুপার।
এরপর ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডের ব্যাট থেকে আসে ১৫ বলে ২১ রান। ১৫তম ওভারে ফার্নান্দোর তৃতীয় ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি।
শ্রীলংকার ১৬৩ রানের তাড়ায় ব্যাট হাত শুরুটা ভালোই করেছিল নেদারল্যান্ডস। ওপেনিং জুটিতে ২৩ রান আসে।
পাওয়ার প্লেতে ৪০ রান করতে পারলেও ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।
লংকান বোলারদের তোপে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও একপ্রান্ত ধরে খেলতে থাকেন ও'ডাউন। ১৫তম ওভারে গিয়ে ৪ উইকেটে দলীয় সংগ্রহ ১০০ পার করেন এ ওপেনার। তবে শেষ রক্ষা করতে পারেননি দলের।
হাসারাঙ্গার পর লংকান দলের সফল বোলার মাহেশ থিকসানা। ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ২৮ ও ৩৩ রান দিয়ে একটি করে উইকেট পেয়েছেন যথাক্রমে লাহিরু কুমারা ও বিনুয়া ফার্নান্দো।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট হাতে নেমে ঝড়ো ইনিংস খেলেন শ্রীলংকার ওপেনার কুশল মেন্ডিস। সমান ৫ বাউন্ডারি ও ছক্কায় ৪৪ বলে ৭৯ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেছেন মেন্ডিস।
তার ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬২ রান জমা করে শ্রীলংকা।
মেন্ডিস ছাড়া বাকি কেউ সেভাবে জ্বলে উঠেনি আজ। নয়তো স্কোরবোর্ড আরও সমৃদ্ধ হতে পারত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান মেন্ডিসের অর্ধেকের চেয়েও কম, অলরাউন্ডার চরিথ আসালাঙ্কার। ৩ বাউন্ডারিতে ৩০ বলে ৩১ রান করেছেন তিনি।
২১ বলে ১৪ রানে সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। ধনাঞ্জয়াকে রানের খাতাই খুলতে দেননি মেকারেন। গোল্ডেন ডাকে ফেরেন ধনাঞ্জয়া।
ভানুকা রাজাপাকসের ব্যাট ছুঁয়ে আসে ১৩ বলে ১৯ রান। ৫ বলে ৮ রান করে ফেরেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা।
এ ফলাফলের পর দুই ম্যাচে নামিবিয়া ও শ্রীলংকার জয় একটি করে। দুই ম্যাচেই হারা আরব আমিরাতের শুধু গাণিতিক সম্ভাবনা বেঁচে আছে। পয়েন্টে এগিয়ে থাকলেও নেট রান রেটে নামিবিয়া ও শ্রীলংকার চেয়ে অনেক পিছিয়ে থাকায় বিদায় ঘণ্টা বাজল নেদারল্যান্ডসের।