১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:২২:৪৪ পূর্বাহ্ন
সেনাবাহিনীতে তরুণদের সংখ্যা বাড়াচ্ছে রাশিয়া
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৪-২০২৩
সেনাবাহিনীতে তরুণদের সংখ্যা বাড়াচ্ছে রাশিয়া

রুশ সেনাবাহিনীতে তরুণদের নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া আরও জোরদার করেছে রাশিয়া। ১ এপ্রিল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ১ লাখ ৪৭ হাজার রুশ তরুণকে সামরিক বাহিনীতে এক বছরের বাধ্যতামূলক যোগদানের আদেশে সই করেন। ২০২২ সালের বসন্তকালীন মিলিটারি সার্ভিসের সময় এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার।

এ বছর তরুণদের কাছে সামরিক বাহিনীকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য একটি বিজ্ঞাপনী প্রচারও চালিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুধু বাধ্যতামূলক এক বছর নয়, বরং সামরিক বাহিনীতে তাদের চুক্তিভিত্তিক যোগদানে আগ্রহী করে তোলাই এর উদ্দেশ্য। খবর ডয়েচে ভেলের।

মার্কিন এক সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া চার লাখের মতো চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগ করে তাদের ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য পাঠাতে চায়। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য ইউক্রেনে আরও বেশি সেনা নিয়োগ এবং মোতায়েনের পরিকল্পনাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

রুশ সেনাবাহিনীর সেনা মোতায়েন বিভাগের প্রধান ভ্লাদিমির সিমলিয়ানস্কি বলেন, আমাদের নতুন করে আরও সেনা পাঠানোর পরিকল্পনা নেই। যাদের এরই মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং যারা স্বেচ্ছায় বিশেষ অভিযানে গেছে, তারাই এজন্য যথেষ্ট।

নোভোসিবিরস্কের একটি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক সের্গেই চেরনিশভ জানিয়েছেন, স্থানীয় কর্মকর্তারা স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে প্রচারের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগদানের বিজ্ঞাপন পাঠিয়েছেন। চেরনিশভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি প্রচারপত্র শেয়ার করেছেন। প্রচারপত্রে তরুণেরা রুশ সামরিক বাহিনীতে যোগ দিলে কী কী সুবিধা পাবেন, তার বর্ণনা দেওয়া আছে।

নিয়োগের এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে চেরনিশভ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, সরকারি কর্মকর্তারা আমার মতে এই বিপণন প্রচারণার জন্য ভুল লক্ষ্যকে বেছে নিয়েছে। ছাত্ররা শিক্ষাজীবন শেষ করে সামরিক সেবা দেবে। তাদের পড়াশোনা ছেড়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বলাটা পাগলামি।

সংবাদ মাধ্যম টাইগা জানিয়েছে, একই ধরনের প্রচারপত্র নোভোসিবিরস্ক শহরের বিভিন্ন বুলেটিন বোর্ড, বাড়ির দরজা এবং সিঁড়িতে রেখে আসার জন্য শহর পরিচালনা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে চায় ক্রেমলিন

জানুয়ারিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু দেশটির সেনাবাহিনীকে সংস্কারের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন। সাড়ে ৩ লাখ সৈন্যের সেনাবাহিনীকে ১০ থেকে ১৫ লাখে পরিণত করাই এর মূল লক্ষ্য। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে এত সৈন্য নিয়োগ করাটা প্রায় অবাস্তব।

ক্রেমলিন আরও প্রস্তাব করেছে যে, সেনাবাহিনীতে যোগদানের বয়স বর্তমানে ১৮ থেকে ২৭ বছরের পরিবর্তে ২১ থেকে ৩০ বছর করা হবে। রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ স্টেট ডুমার সদস্যরা আপাতত বয়সসীমা বাড়ানোর পক্ষে। তারা মনে করেন, এর ফলে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের হার দ্রুত বাড়ানো যাবে।

নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সৈন্যদের কি ইউক্রেনে পাঠানো হবে

বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা হিসেবে যাদের অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো হবে না দাবি করে বারবারই বিবৃতি দিয়েছেন রাশিয়ান কর্মকর্তারা।

তবে নানা প্রতিবেদনে এর বিপরীত চিত্র উঠে এসেছে। গালিনা নামের একজন নারী অভিযোগ করেছেন, তার ছেলেকে নভোসিবিরস্ক থেকে সংঘাতপূর্ণ বেলগোরোড অঞ্চলে মোতায়েন করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, মাত্র তিন মাস সামরিক চাকরির পর কেন তাকে সেখানে পাঠানো হবে? রাষ্ট্রপতি নির্দেশ দিয়েছেন যে কোনো অস্থায়ী সেনাকে যুদ্ধকবলিত এলাকায় পাঠানো হবে না।

মানবাধিকারকর্মী আলেক্সেই টাবালভও জানিয়েছেন, পুতিনের ঘোষণা সত্ত্বেও অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত সেনাদের সংঘাতপূর্ণ এলাকাতে পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা তথ্য পেয়েছি যে সামরিক সেবা দিতে আসা অস্থায়ী সেনাদের সামরিক সেবা দেওয়ার জন্য ইউক্রেন সীমান্তে পাঠানো হচ্ছে।

শেয়ার করুন