অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা সেলিম প্রধানের আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ১১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, জেনে শুনে দুর্নীতিবাজদের কারোর দাওয়াতে যাওয়া মানে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নেওয়া। দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
পর্যবেক্ষণে বিচারক আরও বলেন, রায় দিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব না। তাই দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেবেন না। দাওয়াত দিলে যাবেন না।
রোববার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক বদরুল আলম ভুইয়া এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে সেলিম প্রধানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
রায় শুনতে সেলিম প্রধানের রাশিয়ান স্ত্রীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, সেলিম প্রধানকে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় ৪ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ অনুযায়ী ৪ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হলো। উভয় সাজা একত্রে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সেলিম প্রধানকে আটক করে র্যাব-১। এরপর তার গুলশান, বনানীর বাসা ও অফিসে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে ২৯ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ এবং বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও হরিণের চামড়া জব্দ করা হয়। হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় ওই দিনই সেলিম প্রধানকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একই বছরের ২৭ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছিল।
মামলাটি তদন্ত করে তার নামে মোট ৫৭ কোটির বেশি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ আসিফুজ্জামানের আদালত সেলিমের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।