রংপুরের বদরগঞ্জে নিজ প্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৩) কুপ্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সেই প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির এক জরুরি সভায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মমতাজ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই প্রধান শিক্ষক নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহকারী প্রধান শিক্ষক রোকেয়া খাতুনকে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ বলেন, ‘ওই ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আমার কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে।’
এদিকে ঘটনাটি তদন্ত করতে আজ শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটিতে অপর দুই সদস্য হলেন—উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার শামীমা ইয়াছমিন ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তারস্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার
প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার হওয়ার পর এলাকা শান্ত হয়েছে। শনিবার সকালে বিদ্যালয়ের তালা খুলে দিয়েছেন এলাকাবাসী। শ্রেণিকক্ষে বসে শিক্ষার্থীরা ইসলামের ইতিহাস পরীক্ষা দিয়েছে।
এলাকাবাসী বলছে, চম্পাতলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হিন্দু সম্প্রদায়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গত রোববার মোবাইল ফোনে কুপ্রস্তাব দেন। সেই কল রেকর্ড গত বুধবার রাতে ফাঁস হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে এলাকাবাসী ও অভিভাবকেরা ওই প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে, হাতে ঝাড়ু নিয়ে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে ওই দিন বেলা ১১টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাশপিয়া তাসরিন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম ও বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানান।
কিন্তু প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয়ের তালা খুলে দেওয়া হবে না বলে বিক্ষোভকারীরা ওই কর্মকর্তাদের জানান। এ কারণে ওই দিন অর্ধবার্ষিক গণিত পরীক্ষা না দিয়েই বাড়ি ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা। এদিকে বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে বিদ্যালয়ের তালা না খুলেই দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ওই তিন কর্মকর্তা।