সোমবার মিনায় অবস্থান করার মধ্য দিয়ে চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ জুন) আরাফাত ময়দানে ফজরের পর হজ শুরু হবে। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে কাবা চত্বর।
বিশ্বের ১৬০টি দেশের ২০ লাখ মুসলমানরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে উপস্থিত হয়েছেন মক্কায়। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে ১২ জিলহজ (৩০ জুন) শেষ হবে এবারের হজ।
হজ অফিস জানিয়েছে, আজ ৭ জিলহজ সোমবার হজযাত্রীদের মিনায় যাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সারা বিশ্ব থেকে আগত হজযাত্রীরা পবিত্র হজব্রত পালনের উদ্দেশে আজ বাদ আসর মক্কা থেকে মিনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছেন।
এদিকে, বাংলাদেশ হজ অফিস ও হজ আইটি দলের সমন্বিত অগ্রবর্তী একটি দল আজ বিকেলে মিনায় পৌঁছেছেন এবং তাবুতে অফিস স্থাপন করে নিজ নিজ কার্যক্রম শুরু করেছেন।
এবার বাংলাদেশ থেকে হজ করতে গেছেন এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন হজযাত্রী। তাদের সৌদিতে পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বাংলাদেশ বিমান, সৌদি আরবের এয়ারলাইন্স সৌদিয়া এবং ফ্লাইনাস এয়ার।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত শনিবার (২৪ জুন) দিবাগত রাতে ফ্লাইনাস এয়ারের শেষ ফ্লাইট সৌদির উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর মাধ্যমে চলতি বছরের পবিত্র হজের যাওয়ার ফ্লাইট শেষ হলো। আগামী ২ জুলাই ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। চলতি বছর ৩২৫টি ফ্লাইট হজযাত্রী নিয়ে সৌদি আরব গেছে।
কোন এয়ারলাইন্সের কত ফ্লাইট :
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার হজ করতে যাওয়া কথা ছিল। কিন্তু অস্বাভাবিক খরচ বেড়ে যাওয়া ৯ দফা সময় বাড়িয়েও কাঙ্ক্ষিত কোটা পূরণ করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত ১ লাখ ২২ হাজার ৫৫৬ জন হজযাত্রী চূড়ান্ত নিবন্ধন করে।
এসব হজযাত্রী বহন করার জন্য বাংলাদেশ বিমান, সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ার চুক্তি করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। গত ২১ মে বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফ্লাইটের মাধ্যমে চলতি বছরের ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। যা শেষ হয় ২৪ জুন দিবাগত রাতে ফ্লাইটের মধ্য দিয়ে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি বছর মোট ফ্লাইট সংখ্যা ৩২৫টি। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১৫৯টি ফ্লাইটে ৬১ হাজার ১৮০ জন, সৌদি এয়ারলাইন্স ১১৩টি ফ্লাইটে ৪১ হাজার ৪৬৮ জন এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ৫৩টি ফ্লাইটে ২০ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী বহন করেছে।
এদিকে হজযাত্রী সংকটের কারণে ২৩টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৮টি ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়। এছাড়া অনেক ফ্লাইট আসন খালি রেখে সৌদি আরব গেছে। প্রথম দিনই ১৪০ আসন খালি রেখে বিমান যাত্রা করেছিল।
এসব কারণে শেষ সময়ে এসে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ জন হজযাত্রীকে সৌদিতে পৌঁছে দিতে অতিরিক্ত ১০টি ফ্লাইটের অনুমতি চায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। বিষয়টি সৌদি রাষ্ট্রদূতকে দিয়ে বলা হয় সৌদির ওমরাহ ও হজ মন্ত্রীকে। অবশেষে ২০ জুন ১০টি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি মিলে। যদিও বাংলাদেশ ধর্ম মন্ত্রণালয় ৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।