উত্তরবঙ্গে মহাসড়কে দিনভর ভোগান্তি, ৪ ঘণ্টার পথ যেতে ১৭ ঘণ্টা


, আপডেট করা হয়েছে : 28-06-2023

উত্তরবঙ্গে মহাসড়কে দিনভর ভোগান্তি, ৪ ঘণ্টার পথ যেতে ১৭ ঘণ্টা

ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে মহাসড়কে দিনভর যানবাহনের জট থাকলেও রাত সাড়ে ৯টার পর তা কমতে শুরু করে। একদিকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ অন্য দিকে সারা দিন থেকে থেমে বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয় ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী মানুষদের। 


ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বগুড়া অংশে দক্ষিণে সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনা থেকে উত্তরে গাইবান্ধার চাপরিগঞ্জ পর্যন্ত ৬৮ কিলোমিটার মহাসড়কে বুধবার সকাল থেকেই ছিল ব্যাপক যানজট। 


বগুড়ার শেরপুরের ছোনকা বাজার, শাজাহানপুরের আড়িয়া বাজার থেকে বি ব্লক পর্যন্ত এক কিলোমিটার, বগুড়া সদরের বারপুর থেকে নওদাপাড়া পর্যন্ত দুই কিলোমিটার মহাসড়ক জুড়ে ব্যাপক যানজট ছিল। 


বগুড়ার আড়িয়া এলাকায় মহাসড়কে যানজট। আজ বুধবার বিকেলের তোলা ছবি। তুলেছেন গনেশ দাস 

বগুড়ার আড়িয়া এলাকায় মহাসড়কে যানজট। আজ বুধবার বিকেলের তোলা ছবি। তুলেছেন গনেশ দাস 

সরেজমিনে মহাসড়কে ঘুরে দেখা গেছে, এসব স্থানগুলোয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এক সঙ্গে অধিক সংখ্যক যানবাহন ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার কারণে একদিকে যেমন মহাসড়কে যানবাহনে চাপ অন্যদিকে বৃষ্টিতে নির্মাণাধীন মহাসড়কে কাঁদা পানিতে যানবাহন গতি কমে যাওয়া যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও বৃষ্টিতে নির্মাণাধীন মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনের চাকা আটকে পড়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়। দিনভর মহাসড়কে যানজট এবং ধীর গতিতে যানবাহন চলাচল করলেও রাত ৯টার পর চাপ কমতে থাকে। 


পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা থেকে বগুড়ায় যান সাংবাদিক শাহরিয়ার হাসান। তিনি বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা থেকে বগুড়া যেতে সাড়ে ৪ ঘণ্টা সময় লাগলেও তার লেগেছে ১৭ ঘণ্টা। তিনি গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টায় গাবতলী থেকে গাড়িতে উঠে বগুড়ায় পৌঁছান আজ বুধবার বেলা আড়াইটা দিকে। পুরো রাস্তা জুড়ে ছিল যানজট। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রাস্তায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, টানা বৃষ্টি এবং গরুর গাড়ি চাপ। ঢাকা থেকে বগুড়ায় যেতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় গাজীপুরের চন্দ্রা ও টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে যমুনা ব্রিজ এলাকা পর্যন্ত। 

 


একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আফরোজা পারভীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা থেকে রাজশাহী যেতে তাকে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ঢাকা থেকে রাজশাহী যেতে সাড়ে ৫ ঘণ্টা সময় লাগলেও তাঁর পৌঁছাতে সময় লেগেছ ১২ ঘণ্টা। আফরোজা আরও বলেন, আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি ঢাকা থেকে রওয়ানা হন এবং রাজশাহী গিয়ে পৌঁছান রাত সোয়া ৯টায়। দুটি জায়গায় তাকে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে যমুনা ব্রিজ পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট ছিল। এই জায়গা অতিক্রম করতে সোয়া ৪ ঘণ্টা লেগেছ। আর সিরাজগঞ্জের সালঙ্গা থেকে হাতিকুমরুল পর্যন্ত যেতে পৌনে ২ ঘণ্টা লেগেছে। যানজটের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, দিনভর বৃষ্টি ও রাস্তায় কাদা, উল্টো পথে গরুর ট্রাক চলাচল, ঢাকার ছোট গাড়িগুলো মহাসড়কে ধীর গতিতে চলা ও মাঝেমধ্যে বিকল হয়ে যাওয়া। 


বগুড়ায় মহাসড়কের দক্ষিণ অংশে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক নাজমল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকার দিক থেকে আসা যানবাহনের চাপ রাত সাড়ে ৯টার পর অনেক কমে গেছে। অল্পসংখ্যক যানবাহন চলাচল করছে নির্বিঘ্নে। 


অপরদিকে মহাসড়কের উত্তর অংশে দায়িত্বরত মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক আশিক বলেছেন, রাত ১০টায় উত্তর অংশে যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ কমে যাচ্ছে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার