পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে শান্তি রক্ষা মিশন আর না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ এক ভোটাভুটির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়।
ফ্রান্সের উপস্থাপন করা একটি খসড়া প্রস্তাব ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদন করে। এতে বলা হয়, মিশনটি শনিবার থেকে এর কার্যক্রম বন্ধ করা, এর কাজগুলো হস্তান্তর করা, সেইসাথে সুশৃঙ্খলভাবে ও নিরাপদে কর্মীদের প্রত্যাহার করা শুরু করবে। পূর্ণ কার্যক্রম শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ১৩ হাজার কর্মকর্তা ও সেনাসদস্য ‘মিনউসমা’ নামের একটি মিশনে কর্মরত ছিলেন। এ মিশনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ জনগণকে বিদ্রোহী উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো থেকে নিরাপত্তা দেয়া। ফলে আকস্মিকভাবে জাতিসঙ্ঘের বাহিনী বিদায় নিলে দেশটির সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের একাংশ।
শুক্রবারের বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের অন্যতম স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ‘মিনউসমা’ মিশনের এই আকস্মিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত সমাপ্তির জন্য সরাসরি রাশিয়ান আলোচিত ভাড়াটে যোদ্ধা বাহিনী পিএনসি ওয়াগনারকে দায়ী করেছে।
বৈঠকে জাতিসঙ্ঘের যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি বলেন, শান্তি রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরে যেতে বলা আসলে মালির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের সাথে পিএনসি ওয়াগনারের শীর্ষ কমান্ডার ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের ‘ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের’ ফলাফল।
নিরাপত্তা পরিষদের অবশ্য এই সিদ্ধান্তে আসা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্পও ছিল না। কারণ মালিতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার সম্প্রতি অনেকটা আকস্মিকভাবেই জাতিসঙ্ঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীর কমান্ডকে দেশ ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে।
মালির সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্র ও সামরিক উপকরণ যথেষ্ট পরিমাণে নেই। তবে ২০২১ সালে রাশিয়াভিত্তিক বেসরকারি যোদ্ধা কোম্পানি পিএনসি ওয়াগনারের সাথে চুক্তি করে দেশটির সরকার। সেই থেকে ওয়াগনার গ্রুপের প্রায় ১ হাজার যোদ্ধা মালির কেন্দ্রীয় ও উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। এই দুই অঞ্চলেই ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বেশি।
সূত্র : রয়টার্স