দুর্গাপুরে প্রশাসনের সাথে রফাদফায় মানা হচ্ছে না জমির শ্রেণি পরিবর্তন আইন


, আপডেট করা হয়েছে : 27-07-2023

দুর্গাপুরে প্রশাসনের সাথে রফাদফায় মানা হচ্ছে না জমির শ্রেণি পরিবর্তন আইন

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে প্রতি বছর  আবাদি কৃষিজমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন চলছে তো চলছেই। এ উপজেলায় ফসলি জমির পরিবর্তে এখন দেখা মিলে শুধু পুকুর আর পুকুর!  পুকুর খননকারী চক্রের স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বিঘা চুক্তি টাকার রফাদফার কারনে মানা হচ্ছে না জমির শ্রেনি পরিবর্তন আইনও। মাসিক আইনশৃঙ্খলার মিটিংয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খননের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে। জেলার অন্য উপজেলায় পুকুর খনন বন্ধের জন্য অভিযান পরিচালনা হলেও। এ মৌসুমে দুর্গাপুর উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ পুকুর খননের বিরুদ্ধে অভিযান নেই বললেই চলে।

শুধু তাই নয় রফাদফা করে স্থানীয় প্রশাসন বরং সস্কারের নামে  আবেদনের মাধ্যমে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করাচ্ছে এলাকাবাসীর অভিযোগ।  

গতকাল বুধবার (২৬ জুলাই) পাশ্ববর্তী পুঠিয়া উপজেলায় পুকুর খনন ও রাস্তায় ট্রাক্টর দিয়ে মাটি বহনের অপরাধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ভ্রাম্যমান আদালতে পরিচালনা করেন। পরে  ভুমি সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা আইনে পুকুর খননকারির বিরুদ্ধে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ও জব্দকৃত ভেকু মেশিন চেয়ারম্যানের জিম্মায় প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুঠিয়া উপজেলা সহকারী ভুমি কমিশনার দেবাশীষ বসাক। অপরদিকে, কৃষি জমির ধ্বংস লীলা চালালেও দুর্গাপুরে প্রশাসনের নির্বিকার ভুমিকা নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ বইছে। তবে এর জন্য দায়ী প্রশাসনের অসৎ কর্মকর্তারা এমনটায় জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার পানানগর ইউনিয়নের মহম্মদপুরে রাস্ট্রীয় সম্পদ প্রাচীন সিমানা পিলার গায়েব করে তাহেরপুরের যুবলীগ নেতা আসাদ পুকুর করেছেন প্রায় ৬০/৮০ বিঘা কৃষি জমিতে। এবার  তার পাশেই কৃষি জমি ধ্বংস করে অবৈধভাবে পুকুর খনন করছে সুলতান নামের এক ব্যক্তি। প্রায় ২২ বিঘা জমি কৃষকদের কাছ  থেকে বাগিয়ে ধরে ধ্বংসলীলা চালিয়ে যাচ্ছে। তার ছোট ভাই জাহাঙ্গীর সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাহাঙ্গীরের সাথে আছে কথিত এক স্থানীয় সাংবাদিক তিনি পুকুর পাড়ে বসে থাকে পাহারাদার হিসেবে। পরিচয় দেন কথিত এক চ্যানেলের সাংবাদিক তিনি। সরেজমিনে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় খননকারি সুলতানের ছোট জাহাঙ্গীরের সাথে তিনি বলেন, প্রশাসনের সব আট-ঘাট মেরে পুকুর করতে নেমেছি কারও ক্ষমতা নাই বন্ধ করার, পুকুর খনন চলবে। আপনারা নিউজ করেন তাতে লাভ নাই। একটু পরে ফোন পেয়ে পুকুর খননের জমিতে ছুটে আসে সেই কথিত সাংবাদিক সেখানে কথা বলতেই একটি পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধির সাথে এ প্রতিবেদককে কথা বলতে বলেন। কথা বলতে রাজি না হলে পরে তিনি অকপটে জানায়, এই পুকুরে (ওসি-ইউএনও) অনেক খাচ্ছে। আমরা খেলে দোষ কি! খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, কথিত ওই সাংবাদিকের নাম মাইনুল ইসলাম আগুন। তিনি ছাত্রদলের ক্যাডার হিসেবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে বেড়ায়। সে পানানগর ইউনিয়ন জুড়ে তার তৈরী কিশোর গ্যাংদের নিয়ে রাতের আঁধারে সরকার পতন আন্দোলন ও নাশকতামূলক বৈঠকও করে থাকেন।

কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভাগ সুত্রে জানায়, কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন কার্যকর না থাকায় আবাদি জমি ধ্বংসের লাগামহীন প্রবণতা কোনোমতেই রোধ যাচ্ছে  না। অবৈধ পুকুর খননের নামে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন ও লাগামহীনভাবে কৃষিজমি ধ্বংসের যে প্রবণতা আশঙ্কাজনক বাড়ছে। এসব জমির মধ্যে দুই ফসলি এমনকি তিন ফসলি জমিও রয়েছে উল্লেখজনক হারে।

জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সোহেল রানার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।  

এব্যাপারে, রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ইমতিয়াজ হোসেন বলেন,  

কৃষি জমি রক্ষার্থে ভুমি মন্ত্রনালয় থেকে চিঠি এসেছে। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার