পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করা নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। একই সঙ্গে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে ক্ষমতায় পুনর্বহাল করার সময়সীমা বেধে দিয়েছে।
তা না করা হলে শক্তি প্রয়োগের হুমকিও দিয়েছে দেশগুলো। আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলের দেশ নাইজারের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাজোমকে উৎখাতে নানা চেষ্টা চলছিল দেশটিত। সর্বশেষ গত বুধবারের তৃতীয় অভ্যুত্থান চেষ্টায় পশ্চিমাদের এই মিত্র ক্ষমতাচ্যুত হলেন। এরপর তেকেই তিনি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী রয়েছেন।
অভ্যুত্থানের পর প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান জেনারেল আবদুরাহমানে তিয়ানি নিজেকে দেশের প্রধান নেতা ঘোষণা করেছেন।
সাহেল অঞ্চলে ক্ষমতাচ্যুত নির্বাচিত রাষ্ট্রনেতাদের সর্বশেষ হলেন বাজোম। এর আগে ২০২০ সালে মালি এবং বুরকিনা ফাসোতে একটি সশস্ত্র অভ্যুত্থান হয়।
সাবেক ঔপনিবেশিক শাসক ফ্রান্স এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভ্যুত্থানের পরে নাইজারকে নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আর্থিক সহায়তা স্থগিত করেছে। এদিকে সহায়তা করলে পরিস্থিতি আরও নাগালের বাইরে যাবে বলে সতর্ক করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
নাইজেরিয়ায় একটি জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে ১৫ দেশের সংগঠন ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস) আঞ্চলিক ব্লক রোববার দাবি করেছে, বাজোমকে এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষমতায় পুনর্বহাল করা হবে।
অন্যথায় ব্লকটি সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করতে ‘সমস্ত ব্যবস্থা’ নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, এসব পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সামরিক শক্তি প্রয়োগও থাকতে পারে। রোববার পরে ইকোওয়াস প্রতিরক্ষা প্রধানদের সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইকোওয়াস কীভাবে শক্তি ব্যবহার করতে পারে তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার ছিল না। গত বছর ব্লকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং সামরিক অভ্যুত্থান রোধে একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা বাহিনী তৈরিতে সম্মত হয়েছিল। তবে এর বাহিনী এবং অর্থায়নের বিষয়াবলি এখনো অস্পষ্ট।
ব্লকটি অভ্যুত্থান নেতাদের এবং দেশটির ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সদস্য রাষ্ট্রগুলো নাইজারের সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন বন্ধ করেছে। এমন পরিস্থিতি থাকলে খুব বেশিদিন টিকতে পারবেনা সেনা শাসকেরা। কারণ বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশের একটি নাইজার, প্রায়শই জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন সূচকের তলানিতে পড়ে থাকে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় টেলিভিশনে পঠিত একটি বিবৃতিতে, নাইজারের সামরিক সরকারের সদস্য আমাদু আবদ্রামানে বলেছেন যে শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল নিয়ামেতে আসন্ন সামরিক হস্তক্ষেপের আকারে নাইজারের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের পরিকল্পনা অনুমোদন করা।