আমদানি করে দাম কমাতে চাইলে উলটো আরও বাড়বে


, আপডেট করা হয়েছে : 18-08-2023

আমদানি করে দাম কমাতে চাইলে উলটো আরও বাড়বে

দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান এড কেইস ও রিচার্ড ম্যাকরমিক চলতি সপ্তাহের শুরুতে তাঁদের ঢাকা সফরে মিয়ানমার থেকে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষদের বাংলাদেশে রেখে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। অবশ্য সরকার এ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। 


পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বুধবার (১৬ আগস্ট) ঢাকায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান। 


পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী বলেন, অনেক বন্ধু দেশ মনে করে রোহিঙ্গাদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশেই রেখে দেওয়া দরকার। যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেসম্যান এসে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রেখে দিতে বলেছেন। বাংলাদেশ এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি। 


মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছে কিছু রোহিঙ্গা নিয়ে যেতে। দেশটি ঘোষণা দিয়েছিল কিছু রোহিঙ্গা নেবে। কিন্তু নেয়নি। বাংলাদেশের অন্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকেও রোহিঙ্গাদের নিতে বলা হবে বলে মোমেন জানান। 


মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের অবশ্য অগ্রাধিকার নিজের দেশে ফিরে যাওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের বরং তাঁদের মিয়ানমারে নিতে সাহায্য করা উচিত। বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করছে। 


সেপ্টেম্বরে মোদি-হাসিনা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক


ভারতের দিল্লিতে আগামী ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে জি-২০ সম্মেলন। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জি-২০ সম্মেলনের জন্য দিল্লিতে অবস্থানকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক চেয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জানান, এ বৈঠকের ব্যাপারে ভারত রাজি হয়েছে।


পোলট্রি শিল্পে যেসব কাঁচামাল ব্যবহার হয়, এর ৮৫ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলারের দাম ১০৯ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যবসায়ীদের কিনতে হচ্ছে ১১৪ টাকায়। ফলে ডলারের দাম না কমলে ডিম ও পোলট্রি মুরগির দাম কমানো কঠিন। 


বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন।


এতে বক্তব্য দেন বিপিআইসিসির সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ; ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি)-এর সভাপতি কাজী জাহিদ হাসান, সহসভাপতি আনোয়ারুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান; ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম; ওয়ার্ল্ড’স পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সহসভাপতি মো. তৌহিদ হোসেন, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এফআইএবি)-এর সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আহকাব)-এর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আফতাব আলম, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম আমিরুল ইসলাম প্রমুখ। তারা বলেন, উৎপাদন খরচের বিপরীতে ন্যায্য দাম না পাওয়া, অপপ্রচার এবং বাজার তদারকি সংস্থার চাপে প্রান্তিক খামারিরা দিনদিন আরও প্রান্তিক হয়ে পড়ছেন। ইতোমধ্যে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কমেছে উৎপাদন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ডিম-মাংসের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।


শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, ২০২২ ও ২০২৩ সালের বেশির ভাগ সময় খামারিরা লোকসান দিয়েছেন। উৎপাদন খরচের চেয়েও কম মূল্যে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়েও খামারিরা চেষ্টা করেছেন উৎপাদন সচল রাখতে। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীরা অন্যায্য মুনাফা করেছে অথচ খড়্গ নেমেছে উৎপাদকদের ওপর।


তিনি বলেন, ‘এভাবে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে না। খামারিরা লাভ করতে পারলে যারা সরে গেছে তারা আবারও ফিরে আসবে। উৎপাদন বাড়লে বাজারও স্থিতিশীল হবে।


কাজী জাহিদ হাসান বলেন, ‘ডিম-মুরগির বাজারে সিন্ডিকেটের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এটি অপপ্রচার। ‘প্রান্তিক খামারি’ বনাম ‘করপোরেট খামারি’র বির্তক সৃষ্টির মাধ্যমেও দেশীয় খামারি ও উদ্যোক্তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে।’


মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ডিম-মুরগি আমদানি করা হলে তো দেশেরই ক্ষতি হবে।’


আনোয়ারুল হক বলেন, ‘আমদানি করে ডিমের দাম কমাতে চাইলে উলটো আরও দাম বাড়বে। তখন ১২ টাকার ডিম ২০ টাকায় খেতে হবে। হঠাৎ করে ডিমের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার পেছনে কোনো সিন্ডিকেট নেই। মুরগির ফিডের দাম না কমালে ডিমের উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব না।’ 


নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে ভুট্টা, সয়াবিন মিলসহ ফিড তৈরির অন্যান্য উপকরণ এবং ওষুধের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েছে। ডলার সংকটের কারণে এলসি করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে এনওসি দিয়ে আমদানি করা ফিড গ্রেড পণ্যকেও ফুড গ্রেড লেবেল দিয়ে উচ্চহারে শুল্কায়ন করা হচ্ছে।’ 


আফতাব আলম বলেন, ‘প্রায়ই খামার ও খুচরা বাজারের মধ্যে বড় ধরনের ফারাক লক্ষ করা যাচ্ছে। ১০ দশমিক ৭৫ টাকায় উৎপাদিত ডিমের সঙ্গে ২ টাকা যোগ করলেও খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম ১২ দশমিক ৭৫ টাকার বেশি হওয়া সমীচীন নয়। অথচ বাজারে তা ক্ষেত্রবিশেষে ১৫ টাকা এমনকি কোথাও কোথাও ১৭ টাকা পর্যন্ত উঠতে দেখা গেছে।’



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার