সরকার ব্রিকস সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে মিটিং করেছে—এমন প্রচারণাকে দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মিথ্যাচারের রাজনীতি বিশ্ববাসী ধরে ফেলেছে।’
আজ শুক্রবার আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ এক দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালো পতাকা গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। শ্যামলীতে কালো পতাকা গণমিছিলের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।
আমীর খসরু বলেন, সরকার প্রতারণার রাজনীতি করছে। তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে বাইল্যাটারাল মিটিং হয় না। সেখানে অন্য দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় মিটিং হয় না। মিথ্যাচারের রাজনীতি বিশ্ববাসী ধরে ফেলেছে। বাংলাদেশের মানুষ তো আগেই ধরে ফেলেছে। এই মিথ্যাচারের রাজনীতি আর চলবে না।
তিনি বলেন, জনগণের টাকা খরচ করে পরিবার-দলবল নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় গেছেন ব্রিকসে জয়েন করতে। যেই কাজে গেছেন সেই কাজ হয় নাই। সেখানে বাংলাদেশিদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছেন। সেখানে নৌকায় ভোট দিতে বলেছেন। কোথায় কী বলে! ভোট হচ্ছে বাংলাদেশে, আর তিনি ভোট চাচ্ছেন বাইরে গিয়ে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, আগামীতে ক্ষমতায় টিকে থাকতে প্রশাসন ও বিচারকদের দিয়ে রেজিম তৈরি করেছে সরকার। বিচারকদের দিয়ে সাজা দিচ্ছে। এর জন্য তারা দিন-রাত কাজ করছে। পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।
প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ। এ দেশের মানুষের প্রতিপক্ষ হয়ে কেউ জয়ী হতে পারে নাই। তাই বাংলাদেশের মানুষের প্রতিপক্ষ কেউ হবেন না। পুলিশ ভাইয়েরা হবেন না। র্যাব ভাইয়েরা হবেন না। বিজিবি হবেন না, আনসার হবেন না। সরকারি কর্মকর্তারা হবেন না। বিচারকেরা হবেন না। সবার কাছে বার্তা—দেয়ালের লেখন পড়তে শিখুন। সেখানে লেখা শেখ হাসিনা বিদায় হও। জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেবেন না। আর নিলে সেই দায়-দায়িত্ব আপনাদের।’
সরকার নতুন করে জঙ্গি নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘বহির্বিশ্ব এই জঙ্গি নাটক বিশ্বাস করে না। এটি পুরোনো হয়ে গেছে। বরং এ দেশে আওয়ামী লীগের চেয়ে বড় জঙ্গি কোনো দল নাই। তাদের চেয়ে বড় কোনো সন্ত্রাসী দল নেই। তাদের আর ক্ষমতায় রাখা যাবে না।’
আজ জুমার নামাজের পর থেকেই শ্যামলী ক্লাব মাঠের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সমাবেশ চালিয়ে যান তাঁরা। সমাবেশ শেষে কালো পতাকা মিছিল বের হয়। মিছিলটি শ্যামলী থেকে শিয়া মসজিদ, তাজমহল রোড, নূরজাহান রোড, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড হয়ে বছিলা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবেদিন ফারুক, মেজল (অব.) কামরুল ইসলাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. মজিবর রহমান সারোয়ার, হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।