চট্টগ্রাম নগরীর রঙ্গীপাড়ায় খোলা নালায় পড়ে নিখোঁজ দেড় বছরের শিশু ইয়াছিন আরাফাতের মরদেহ ১৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে স্থানীয় একটি নালা থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যে নালায় শিশুটি পড়ে গিয়েছিল, তাঁর পাশের ভবনের সংযোগ নালা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই নালায় আটকে ছিল শিশুটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল রোববার বিকেলে শিশুটি নালায় পড়ে যাওয়ার পর থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। আজ সকাল থেকে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সহায়তায় নালায় ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল শিশুটির মরদেহের সন্ধান পায়।’
গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ চট্টগ্রাম নগরের উত্তর রঙ্গীপাড়া এলাকায় কে এম হাশেম টাওয়ারের পাশে নালায় পড়ে যায় শিশু আরাফাত। সে স্থানীয় বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেনের ছেলে। পরে ফায়ার সার্ভিস খবর পেয়ে ওই দিন বিকেল থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
স্থানীয়রা জানায়, হালিশহর এলাকার ওই নালাটি আকারে বড় এবং সেখানে আবর্জনার স্তূপ আছে। সেখানে পড়ে গিয়ে তলিয়ে যায় শিশুটি। গত শনিবার রাতভর অতিবৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা রোববার দুপুর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে ছিল। যে খোলা নালায় শিশুটি পড়ে গিয়েছিল ওই নালা লাগোয়া সড়কে পানি উঠেছিল। তবে দুপুরের মধ্যে পানি নালায় নেমে যায়।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩০ জুন নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকার চশমা খালে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা পড়ে গিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়।
এরপর একই বছরের ২৫ আগস্ট নগরীর মুরাদপুর মোড়ে নালায় তলিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন সালেহ আহমেদ নামে এক সবজি ব্যবসায়ী। ঘটনার পর টানা কয়েক দিন অভিযান চালিয়েও তাঁকে উদ্ধার করতে না পারায় একপর্যায়ে তৎপরতা বন্ধ করে দেয় ফায়ার সার্ভিস। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়নি আজ পর্যন্ত।
একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় ১৯ বছর বয়সী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া নালায় তলিয়ে যান। চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের প্রথম বর্ষের এই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয় নিখোঁজের দিন রাতে।
একের পর এক নালায় নিখোঁজের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘নাগরিকদের প্রতি দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর অবহেলা ও অবজ্ঞার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সংস্থাগুলো নিজেদের আখের গোছানোর জন্য মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে মেগা লাভের কাজে ব্যস্ত।’