পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হয়েছে গত ৩১ জুলাই। এর পরের মাস আগস্টে ছাত্রলীগে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময়ের রীতি না থাকায় এক মাসের বেশি সময় পর গতকাল শনিবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল শাখার নতুন সভাপতি দুর্জয় পাল। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে একদল যুবক তাঁদের ফুলের তোড়া ভেঙে দিয়েছেন এবং তিন কর্মীকে ধাক্কা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই শীর্ষ নেতার বিরোধ চলার মধ্যে ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটল। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয়ে কথা বলতে, বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে কিংবা কোনো উপলক্ষে নেতাদের ফুল দিতে প্রায়ই ক্যাম্পাসে আসেন অন্যান্য ইউনিটের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম ঘটল।
সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি দুর্জয় পাল প্রথম আলোকে বলেন, নতুন কমিটি গঠনের পর সৌজন্যের অংশ হিসেবে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে শনিবার সন্ধ্যায় তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে তিনি দুই শ নেতা-কর্মীকে নিয়ে ফুলের তোড়াসহ রোকেয়া হলের সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে সাত থেকে আটজন যুবক সেখানে আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেওয়া ওই যুবকেরা সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বহিরাগত আখ্যা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে বলেন। একপর্যায়ে তাঁরা ফুলের তোড়া ভেঙে ফেলেন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন (ওপরে বাঁয়ে), সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ওপরে ডানে)। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির (নিচে বাঁয়ে), সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত (নিচে ডানে)
দুর্জয় পালের ভাষ্য, ‘আমাদের ক্যাম্পাস ছাড়তে বলা ওই যুবকেরা বলেছেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের ফুল দিতে হলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় কিংবা শীর্ষ নেতাদের বাসায় যান। বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে আসা চলবে না। তাঁরা আমাদের ফুলের তোড়া মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে ভেঙে ফেলেন। এ সময় যাঁদের হাতে ফুলের তোড়া ছিল, আমাদের সেই তিন কর্মীকে ধাক্কা দেন ওই যুবকেরা। তাঁরা আমাদের দ্রুত এবং দৌড়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে বলেন। সঙ্গে থাকা নারী কর্মীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা হাঁটা শুরু করি। ওই যুবকেরা রোকেয়া হলের সামনে থেকে শামসুন নাহার হল পর্যন্ত মোটরসাইকেলে করে আমাদের অনুসরণ করেন। ওই যুবকদের আমরা চিনতে পারিনি। বিষয়টি ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে জানিয়েছি।’
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রগুলো বলছে, সলিমুল্লাহ মেডিকেলের নেতা-কর্মীদের ফুলের তোড়া ভাঙা ও ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েক্স শাহরিয়ার ওরফে নীরব জড়িত। তবে এই অভিযোগের বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সায়েক্স শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ বিষয়ে মাজহারুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। জেনে এ বিষয়ে বলতে পারব।’