সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে স্যালাইনের অভাব নেই উলেস্নখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, কেউ কেউ বলছে বাজারে স্যালাইনের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আমরা সাত লাখ ব্যাগ স্যালাইন ভারত থেকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। আজকালের মধ্যে সাড়ে তিন লাখ ব্যাগ স্যালাইন দেশে এসে যাবে। বাকিটা পরের দিন আসবে। এর বেশি লাগলেও আমরা তা আনার ব্যবস্থা করব।
শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের ডে উপলক্ষে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগের বেশ কয়েকটি ইউনিট উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'শুধু ঢাকা সিটিতে নয়, সারাদেশেই ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এডিস মশা সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে। আপনারা জানেন, সারাদেশে দেড় লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিন আড়াই হাজার নতুন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। এ পর্যন্ত সাতশ মতো রোগীর মৃতু্য হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সরকারের পক্ষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা চালানো সম্ভব নয়, এর জন্য সামাজিক আন্দোলন করতে হবে।'
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'মশা নিধনের কার্যক্রম কয়েক মাস করলে চলবে না। সারাবছর মশা নিধনের কার্যক্রম চালাতে হবে। তবেই মশা নিধন করা সম্ভব হবে। এখনও মশা বাড়ছে, তাই রোগীও বাড়ছে। এতে মৃতু্যও বাড়ছে। যে পর্যন্ত মশা না কমবে, সে পর্যন্ত মৃতু্যও কমবে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভালো করে স্প্রে করে ও সারাবছর পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালায়। এরজন্য ওই সব দেশে মশাও কম, মৃতু্যও কম। আমরা এই পরামর্শ দিয়েছি সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোকে আগামী দিনে এই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। পাশাপাশি এই বলেছি, যেসব ওষুধ তৈরি করে ও আমদানি করে ব্যবহার করে সেই ওষুধগুলো যেন সঠিক মানের হয়। অনেকেই বলেন, এই ওষুধে মশা মরে না। কিছুক্ষণের জন্য নির্জীব হয়ে পড়ে থাকে। এতে মশা মরছে না, যে কারণে ওই মশা আবার উড়ে গিয়ে মানুষকে কামড়ায় ও মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়ে।'
জাহিদ মালেক বলেন, 'আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে দেশের উন্নয়ন। বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি হচ্ছে সন্ত্রাস আর গ্রেনেড হামলা করা। তারা মানুষের উন্নয়ন চায় না তারা মানুষকে পুড়িয়ে মারে। তারা দেশের স্বাধীনতাও চায়নি। বিএনপি অপপ্রচার ও মিথ্যা কথার রাজনীতি করে। তাদের কাজই হলে মিথ্যাকে সামনে এনে মানুষকে বিভ্রান্তি করা। সামনে জাতীয় নির্বাচন দেশের মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন, তারা আর বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতায় আনতে চায় না। কারণ বিএনপি এখন হচ্ছে নেতাবিহীন একটি দল। নেতাবিহীন দল আর চালক ছাড়া গাড়ি একই কথা। ওই চালক ছাড়া গাড়িতে মানুষ চড়তে চায় না।'
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই দিন ছাত্র শিক্ষকদেরর্ যালিতে অংশ নেন। কেক কেটে এবং গাছের চারা রোপণ করে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের ডে'র উদ্বোধন করেন। তিনি মেডিসিন বিভাগের পুরুষ ও নারী রোগীদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। এ সময় তিনি চিকিৎসক ও নার্সদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'আপনার ভালো করে সেবা দিন। আপনাদের সেবার ওপর নির্ভর করবে এই হাসপাতালে মানোন্নয়ন।'
কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. আরশাদ উলস্নাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মহসীন মৃধা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন সরকার, শিশু বিভাগের অধ্যাপক নাজমা বেগম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসরাফিল হোসেন প্রমুখ।